শিরোনাম
ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিউবাকে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসের মদদদাতা দেশের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, একটি বন্দী মুক্তি চুক্তির অংশ হিসেবে এটি করা হবে।
এর কিছুক্ষণ পর কিউবা ঘোষণা করে যে তারা ‘বিভিন্ন অপরাধ’-এ জড়িত ৫৫৩ জন বন্দীকে মুক্তি দেবে। আশা করা হচ্ছে, এর মধ্যে চার বছর আগে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরাও থাকবেন।
২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদের শেষ দিকে কিউবাকে সন্ত্রাসের তালিকায় পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করেন। ফলে দেশটির জন্য মার্কিন অর্থনৈতিক সাহায্য ও অস্ত্র রপ্তানি নিষিদ্ধ হয়ে যায়।
তবে মঙ্গলবার বাইডেন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সমর্থনে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
কিউবা বাইডেনের এই পদক্ষেপকে 'সঠিক অভিমুখের দিকে একটি পদক্ষেপ' হিসেবে প্রশংসা করেছে। তবে তারা একইসঙ্গে এটি 'সীমিত' বলেও উল্লেখ করেছে।
কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এই সিদ্ধান্ত নির্দিষ্ট বাধানিষেধের অবসান ঘটাবে, যা অন্যান্য নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে মিলে কিউবার অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে এবং জনসংখ্যার জন্য ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে।'
ক্যাথলিক চার্চের মধ্যস্থতায় আলোচনার কয়েক ঘণ্টা পরে একটি পৃথক বিবৃতিতে জানানো হয়,কয়েক শ' বন্দিকে 'ধাপে ধাপে' মুক্তি দেওয়া হবে।
বন্দীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে আশা করা হচ্ছে, ২০২১ সালে কিউবার অর্থনৈতিক পতনের পর সংঘটিত বিশাল বিক্ষোভের পর বন্দি হওয়া কিছু প্রতিবাদকারীকে মুক্তি দেওয়া হবে।
বর্তমানে কিউবা উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া ও ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসের মদদদাতা দেশের তালিকায় রয়েছে। এই তালিকায় থাকা মানে হলো, যুক্তরাষ্ট্রের মতে তারা বারবার আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের কার্যক্রমে মদদ দিয়েছেন।
২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তালিকা থেকে কিউবাকে বাদ দেওয়ার পর ট্রাম্প আবার এই তালিকায় কিউবাকে অন্তর্ভুক্ত করেন। কারণ হিসেবে তিনি দেশটির ভেনিজুয়েলার নেতা নিকোলাস মাদুরোকে সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন।
তখন কিউবা এই পদক্ষেপকে 'অসৎ,' 'ভণ্ডামি' এবং :রাজনৈতিক সুবিধাবাদের কাজ' হিসেবে অভিহিত করেছিল।
বন্দী মুক্তির পথ সুগম করার পাশাপাশি এই সিদ্ধান্তকে কিউবা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
এটি অন্যান্য বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনার পথ প্রশস্ত করতে পারে এবং কিউবার আর্থিক দুরবস্থাও কিছুটা কমাতে সহায়তা করতে পারে। কেননা কিছু বড় ব্যাংক ও বিদেশি বিনিয়োগকারী সেখানে আইনি কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যায় পড়ছেন।
বাইডেন কংগ্রেসকে তার পরিকল্পনা জানাবেন, যেখানে তিনি ট্রাম্প-যুগের কিছু আর্থিক নিষেধাজ্ঞা বাতিল করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করবেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
এছাড়া কিউবায় বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির ওপর ব্যক্তিগত দাবি স্থগিত রাখার কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০ জানুয়ারি ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে এলে তিনি এই সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত মার্কো রুবিও দীর্ঘদিন ধরে কিউবার ওপর নিষেধাজ্ঞার পক্ষে মত দিয়েছেন। তার পরিবার ১৯৫০-এর দশকে ফিদেল কাস্ত্রোকে ক্ষমতায় আনা কমিউনিস্ট বিপ্লবের আগে কিউবা ছেড়ে চলে আসেন।