ঢাকা, ৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডে আসন্ন বাণিজ্য আলোচনায় ‘ইনসাফ’ রক্ষার অঙ্গীকার করেছে চীন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপে বৈশ্বিক বাজারে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তার পর এই প্রথম মুখোমুখি আলোচনা হতে যাচ্ছে দুই বৃহৎ অর্থনীতির দেশের মধ্যে।
বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় ফেরার পর ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে সর্বমোট ১৪৫ শতাংশ হারে নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন, যার ওপর আবার ক্ষেত্রভিত্তিক অতিরিক্ত শুল্কও আরোপ করা হয়েছে। এর পাল্টায় বেইজিং যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ১২৫টি শুল্ক আরোপসহ একাধিক লক্ষ্যভিত্তিক ব্যবস্থা নিয়েছে।
সপ্তাহান্তে অনুষ্ঠেয় আলোচনাগুলো মূলত ভবিষ্যৎ আলোচনার ভিত্তি নির্ধারণে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট। ফক্স নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা আগে ঠিক করব কী নিয়ে কথা বলব। আমার ধারণা, এটি একটি উত্তেজনা প্রশমনের আলোচনা, বড় কোনো বাণিজ্য চুক্তির নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন ট্রেজারি সেক্রেটারি বেসেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধি জামিসন গ্রিয়ার। অপরদিকে চীনের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন ভাইস প্রিমিয়ার হ্য লিফেং, এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশটি আলোচনায় তাদের নীতিগত অবস্থান বজায় রাখবে এবং ‘আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার ও নৈতিকতার পক্ষেই’ থাকবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘'যুক্তরাষ্ট্র যদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায়, তবে তাকে একপাক্ষিক শুল্ক নীতির ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র যদি একরকম কথা বলে আর আরেকরকম কাজ করে কিংবা আলোচনার আড়ালে চীনকে ভয় দেখাতে ও ব্ল্যাকমেইল করতে চায়, তাহলে চীন কখনোই রাজি হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘'চীন কোনো চুক্তির বিনিময়ে তার নীতিগত অবস্থান ও আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার বিসর্জন দেবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয় (ইউএসটিআর) জানায়, গ্রিয়ার আলোচনায় চীনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বিষয়ে আলাপ করবেন, তবে হ্য লিফেংয়ের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
পারস্পরিক পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এতে বৈশ্বিক আর্থিক বাজারে প্রভাব পড়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বড় ধরনের মন্দা এসেছে বলে জানা গেছে।
'এটা টেকসই নয়, বিশেষ করে চীনের দিক থেকে। ১৪৫ ও ১২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যত একটি নিষেধাজ্ঞার সমান। আমরা বিচ্ছিন্নতা চাই না, আমরা চাই ন্যায্য বাণিজ্য,’ বলেন বেসেন্ট।