ঢাকা, ১৮ জুন ২০২৫ (বাসস): ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর ইসরাইেলের হামলায় অংশ নেবে কি না, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইরান শান্তি আলোচনার জন্য তার দ্বারস্থ হয়েছে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, হোয়াইট হাউসে জাতীয় পতাকার একটি নতুন খুঁটি স্থাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এটা করতেও পারি, না-ও করতে পারি। মানে, কেউ জানে না আমি কী করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলতে পারি, ইরানের সমস্যা অনেক, এবং তারা এখন আলোচনায় বসতে চায়।’
ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান এমনকি হোয়াইট হাউসে প্রতিনিধি পাঠিয়ে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে এবং ইসরাইলের বিমান হামলা বন্ধে আলোচনা করতে চেয়েছে।
‘তারা প্রস্তাব দিয়েছে যে তারা হোয়াইট হাউসে আসবে। এটা সাহসিকতার কাজ, কিন্তু তাদের জন্য সহজ নয়। আমি বলেছি, কথা বলার জন্য এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে দেখা যাক। এখন আর এক সপ্তাহ আগের মতো নয়- বড় পার্থক্য।”
তবে এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলে ট্রাম্প বলেন, ‘কিছুই খুব দেরি হয়ে যায় না।’
ট্রাম্প ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি বাতিল করেছিলেন এবং পরে এক নতুন চুক্তির মাধ্যমে কূটনৈতিক সমাধানের পথ ধরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ছয় দিন আগে ইসরাইল ইরানে হামলা চালানোর পর ট্রাম্প তার অবস্থান বদলান এবং এখন ইসরাইলের পাশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সম্পৃক্ততা বিবেচনা করছেন।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প একাধিক যুদ্ধংদেহি বার্তা দেন। তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেয়ীকে ‘সহজ লক্ষ্যবস্তু’ বলে উল্লেখ করেন এবং তার ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ দাবি করেন।
সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় তিনি বলেন: ‘দুইটা সহজ শব্দ- নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ। এর মানে আমি আর সহ্য করতে পারছি না। আর না, এবার গিয়ে ওদের সব পারমাণবিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেব।’
ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রতিদিন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জাামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেন এবং তাকে ‘চালিয়ে যেতে’ বলেছেন।
‘তিনি ভালো মানুষ, অনেক কিছু করছেন,’ বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন। তবে ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন: ‘আমি বলেছি, দয়া করে আগে তোমার নিজের যুদ্ধটা মেটাও। পরে না হয় এটা নিয়ে ভাবো।’
ট্রাম্পের দাবি উড়িয়ে দিয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশন এক বিবৃতিতে জানায়, ‘কোনো ইরানি কর্মকর্তা হোয়াইট হাউসের দরজায় গিয়ে কাতর অনুরোধ জানানোর মতো নতজানু আচরণ করেননি।’
তারা আরও বলেছে, ‘ট্রাম্পের মিথ্যার চেয়ে ঘৃণিত হলো তাঁর কাপুরুষোচিত হুমকি- ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে ‘সরিয়ে দেওয়ার’ কথা বলা।’