‘ঐতিহাসিক’ তুরস্ক সফরে যাচ্ছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী

বাসস
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ২০:৫৯

ঢাকা, ২০ জুন, ২০২৫ (বাসস) : আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান শুক্রবার তুরস্ক সফরে যাচ্ছেন—যেটিকে ইয়েরেভান আখ্যা দিয়েছে ‘ঐতিহাসিক’ এক পদক্ষেপ হিসেবে, যার মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তির পথে অগ্রগতি সম্ভব বলে আশা করা হচ্ছে।

আর্মেনিয়া ও তুরস্ক কখনোই আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেনি এবং ১৯৯০-এর দশক থেকে দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ রয়েছে।

প্রথম  বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে অটোমান সাম্রাজ্যে আর্মেনীয়দের গণহত্যার অভিযোগ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক চরমভাবে তিক্ত। ইয়েরেভান এটিকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে, যা তুরস্ক দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

এ ছাড়া, তুরস্ক তার ঘনিষ্ঠ মিত্র আজারবাইজানকে আর্মেনিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সংঘাতে বরাবরই সমর্থন দিয়ে এসেছে।

ইস্তাম্বুল  থেকে এএফপি জানায়, আর্মেনীয় সংসদের স্পিকার আলেন সিমোনিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের আমন্ত্রণে পাশিনিয়ান এই সফরে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক সফর, কারণ আর্মেনিয়া প্রজাতন্ত্রের কোনো প্রধান এই পর্যায়ে এবারই প্রথমবার তুরস্ক সফর করছেন। আঞ্চলিক সব বিষয়ই এই সফরে আলোচনায় আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজারবাইজানের সঙ্গে যুদ্ধের ঝুঁকি বর্তমানে খুবই কম। এখন আমাদের লক্ষ্য এই সম্ভাবনাগুলো সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ করা। পাশিনিয়ানের তুরস্ক সফর এই লক্ষ্যে একটি পদক্ষেপ।’

আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, এই সফরে পাশিনিয়ান ও এরদোয়ান আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মধ্যকার শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের অগ্রগতি এবং ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব নিয়েও আলোচনা করবেন।

এর ঠিক আগের দিন বৃহস্পতিবার আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ তুরস্কে এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তুর্কি-আজারি জোটকে ‘শুধু আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেন।

এ সময় এরদোয়ান বলেন, ‘আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে তুরস্ক জোরালোভাবে সমর্থন করে।’

গত মার্চে বাকু ও ইয়েরেভান একটি শান্তিচুক্তির খসরা চূড়ান্ত করলেও পরে আজারবাইজান কয়েকটি শত- যেমন আর্মেনিয়ার সংবিধানে সংশোধন- তুলে ধরেছে, যা না মানলে তারা চুক্তি স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে।

পাশিনিয়ান বরাবরই আঙ্কারা ও বাকুর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে আসছেন।

চলতি বছরই তিনি ঘোষণা দেন, ১৯১৫ সালের হত্যাকাণ্ডকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আর্মেনিয়ার প্রচার বন্ধ করা হবে, যেটি ছিল তুরস্কের জন্য একটি বড় ছাড়, যদিও আর্মেনিয়ার অভ্যন্তরে এর সমালোচনা হয়।

পাশিনিয়ান এর আগেও ২০২৩ সালে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তুরস্ক সফর করেছিলেন, তখন তিনি পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে প্রথম অভিনন্দন জানানো বিদেশি নেতাদের একজন ছিলেন।

২০২১ সালের শেষ দিকে দুই দেশ বিশেষ দূত নিয়োগ করে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের উদ্যোগ নেয়। এর আগে ২০২০ সালে নাগরনো-কারাবাখ যুদ্ধে আর্মেনিয়ার পরাজয়ের পর উভয় দেশ এই উদ্যোগে এগিয়ে আসে।

২০২২ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ফ্লাইটও পুনরায় চালু হয়, যা দুই বছর বন্ধ ছিল।

এর আগে ২০০৯ সালে সীমান্ত খুলে দেওয়ার লক্ষ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল, তবে সেটি কখনোই আর্মেনিয়ার সংসদে অনুমোদন পায়নি এবং ২০১৮ সালে সেটি বাতিল হয়ে যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নাটোরে বাস-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ২
চাঁদপুরে ১৩ জনকে ব্ল্যাক বেল্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান
জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত : এটিএম মাসুম
ইরান-ইসরাইল সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে : এরদোয়ান
ময়মনসিংহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, আহত ২০
অনূর্ধ্ব-১৯ সিক্স-এ-সাইড ক্রিকেট দিয়ে টেস্ট মর্যাদার ২৫ বছর উদযাপন করবে বিসিবি
বিদেশের মাটিতে প্রথম ফাইফার নাইমের
ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে তারাই জেল খেটেছে : এ্যানি
দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ময়দানে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে : শফিকুর রহমান
তারেক রহমানের ফেরার প্রস্তুতি চলছে : আমীর খসরু
১০