ঢাকা, ২৬ জুন, ২০২৫ (বাসস) : মিয়ানমারের জান্তা সরকার বৃহস্পতিবার প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের জব্দকৃত মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে। তবে দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে মাদক জব্দের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
ইয়াঙ্গুন থেকে এএফপি জানায়, মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার দেশের তিনটি স্থানে প্রায় ২৯৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যের জব্দকৃত মাদকদ্রব্য ধ্বংস করে। রাজধানী নেইপিদোতে অবস্থিত মাদকবিরোধী পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস উপলক্ষে এই মাদকদ্রব্য ধ্বংস কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে এবারের জব্দকৃত মাদকের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫ কোটি এবং ২০২৩ সালের তুলনায় ১৫ কোটি ডলার কম।
২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে সেনাবাহিনী ও তাদের বিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। সব পক্ষের বিরুদ্ধেই কালোবাজারি থেকে অর্থ সংগ্রহের অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার পর সৃষ্ট বিশৃঙ্খলায় দেশটিতে মাদক উৎপাদন, অবৈধ খনন ও অনলাইন প্রতারণা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ মাদকবিরোধী কর্মকর্তা বলেন, দেশজুড়ে চলমান সংঘাত মাদক উৎপাদন ও পাচার প্রতিরোধে আমাদের জন্য বড় বাধা।
পুলিশ জানায়, ইয়াঙ্গুন, মান্দালয় ও তাউংজিতে ধ্বংস করা মাদকের মধ্যে ছিল ১ হাজার ৭০০ কেজির বেশি হেরোইন, ১৬ হাজার কেজি মেথামফেটামিন এবং ২৮১ মিলিয়ন উত্তেজক পিল।
মিয়ানমারের জান্তা সরকার বর্তমানে সেনা-বিরোধী গেরিলা ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে লড়াই করছে। এসব গোষ্ঠী দেশের প্রান্তিক অঞ্চলে সক্রিয় এবং সেখানে কালোবাজারি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক বার্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তুন তুন নাং বলেন, কিছু জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি ও স্থিতিশীলতার ঘাটতিকে কাজে লাগিয়ে সহজে অর্থ উপার্জনের জন্য মাদক উৎপাদন ও পাচারের সঙ্গে যুক্ত।
বিশ্লেষকরা এর আগেও অভিযোগ করেছেন, লাভজনক মাদক উৎপাদনের সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীরও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক সংস্থা (ইউএনওডিসি) গত মাসে জানায়, ২০২৪ সালে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মেথামফেটামিন জব্দের পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে।
সংস্থাটি জানায়, ২০২৪ সালে ওই অঞ্চলে মোট ২৩৬ টন মেথামফেটামিন জব্দ হয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি।