ঢাকা, ২৮ জুন, ২০২৫ (বাসস) : শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে গাজায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত বলেছেন। তিনি বলেছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে। গাজায় ইসরাইলি-সমর্থিত খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুর ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
সাংবাদিকদরা ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি বিষয়ে জানতে চাইলে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মনে করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে আমরা যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে যাচ্ছি।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের ক্ষয়িষ্ণু দিনগুলোতে ট্রাম্পের দলের সমর্থনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছিল।
মার্চ মাসে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে, হামাসের ওপর নতুন করে ধ্বংসাত্মক আক্রমণ শুরু করে। হামাস গত ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে ইসরাইলে আক্রমণ করে।
দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করে ইসরাইল দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় সমস্ত খাদ্য ও অন্যান্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
ইসরাইল তখন থেকে বিতর্কিত মার্কিন এবং ইসরাইলি-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে খাদ্য পুনরায় চালু করার অনুমতি দিয়েছে, যার মধ্যে মার্কিন নিরাপত্তা ঠিকাদাররা ইসরাইলি সেনাদের সাথে সীমান্তে কাজ করছে।
শুক্রবার জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলেছেন, জিএইচএফ ব্যবস্থা সাহায্যপ্রার্থী মানুষকে গণহত্যার দিকে পরিচালিত করছে, ইসরাইলের অভিযোগ, জাতিসংঘ ‘হামাসের সাথে নিজেদের জোটবদ্ধ করছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে ফিলিস্তিনিদের বারবার হত্যার খবর পাওয়া গেছে। যেখানে ইসরাইলি বাহিনী হামাস জঙ্গিদের সাথে লড়াই করছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জনগণকে লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করেছে এবং জিএইচএফ তাদের কেন্দ্রগুলোর সাথে কোনও মারাত্মক ঘটনার যোগসূত্র অস্বীকার করেছে।
কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা প্রতিবেদনের পর, শুক্রবার জাতিসংঘের কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য সাহায্য প্রদানকারীরা সাহায্যের জন্য আসা ক্ষুধার্ত মানুষকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি বিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ‘নতুন সাহায্য বিতরণ ব্যবস্থা একটি হত্যাক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, ‘যেখানে ‘নিজের এবং তাদের পরিবারের জন্য খাবার পেতে চেষ্টা করার সময় মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছে’।
তিনি এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছেন, ‘জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে এই জঘন্য কাজের অবসান ঘটাতে হবে’।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মে মাসের শেষের দিক থেকে সরবরাহের সন্ধানে ত্রাণ কেন্দ্রগুলোর কাছে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
দেশটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থাও বারবার ত্রাণ চাইতে গিয়ে মানুষ নিহত হওয়ার কথা বলেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘মানুষ কেবল নিজের এবং তাদের পরিবারের খাবার জোগাড় করার চেষ্টা করেই মারা যাচ্ছে’।
তিনি বলেন, ‘খাদ্যের সন্ধান কখনই মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত নয়।’
মেডিকেল দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জিএইচএফ ত্রাণ প্রচেষ্টাকে ‘মানবিক সহায়তার ছদ্মবেশে হত্যা’ বলে অভিহিত করেছে।