ঢাকা, ২৮ জুন ২০২৫ (বাসস): থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা শনিবার জরুরি সফরে দেশের বন্যাকবলিত উত্তরাঞ্চল পরিদর্শন করেছেন। যেখানে মৌসুমি বৃষ্টিপাতে হাজার হাজার ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় সেনাবাহিনী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে।
ব্যাংকক থেকে এএফপি জানায়, রয়্যাল থাই আর্মি জানিয়েছে যে চিয়াং রাই প্রদেশের পাঁচটি জেলায় ৩ হাজার ৭০০টিরও বেশি ঘরবাড়ি এবং ৮০ হেক্টর কৃষিজমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া তিনটি এলাকায় সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
আগামী কিছুদিনেও ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী ফেসবুক পাতায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, কাদা-মিশ্রিত পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকা থেকে নৌকায় করে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী পেটংতার্ন সীমান্তবর্তী ফায়া মেংরাই জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন। এই জেলা লাওস সীমান্ত থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার (১৫ মাইল) দূরে অবস্থিত।
সরকারি এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী বন্যাকবলিত জনগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর যত্নসহ সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।”
এই সফর এমন সময় হলো, যখন রাজধানী ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা জমায়েত হয়েছেন, একটি কূটনৈতিক ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার উপর চাপ বাড়ছে।
বন্যায় মোট কতজন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সেনাবাহিনী বলেছে, ৪ হাজার ৪০০টির বেশি পরিবার এই দুর্যোগের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।
ইংল্যান্ডের দুর্যোগ প্রতিরোধ সংস্থা জানায়, তারা জলস্তরের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং হঠাৎ বন্যার আশঙ্কায় বাসিন্দাদের মূল্যবান জিনিসপত্র উঁচু স্থানে সরিয়ে নিতে বলেছে।
থাইল্যান্ডে প্রতি বছর তৃতীয় প্রান্তিকে মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। কিন্তু মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন বৃষ্টিপাত আরও তীব্র এবং অনিয়মিত হচ্ছে, ফলে ধ্বংসাত্মক বন্যার আশঙ্কাও বেড়েছে।
২০১১ সালের ভয়াবহ বন্যায় থাইল্যান্ডে ৫০০’র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল এবং লক্ষাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।