জরুরি টিকাদানে মৃত্যুহার ৬০% কমেছে : গবেষণা

বাসস
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১৯:৫৫

ঢাকা, ১২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : কলেরা, ইবোলা ও হামের মতো রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় জরুরি ভিত্তিতে টিকাদান কর্মসূচি চালানোর ফলে গত পঁচিশ বছরে এসব রোগে মৃত্যুর হার প্রায় ৬০ শতাংশ কমেছে বলে এক নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে।

এছাড়া প্রায় সমপরিমাণ সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, এই উদ্যোগের ফলে কয়েক বিলিয়ন ইউরো অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জিত হয়েছে।

জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, টিকাদান জোট গ্যাভি এই গবেষণাটি পরিচালনায় সহায়তা করে। অস্ট্রেলিয়ার বার্নেট ইনস্টিটিউটের গবেষকদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে গ্যাভি প্রথমবারের মতো বিশ্বজুড়ে জরুরি টিকাদান কর্মসূচির জনস্বাস্থ্য ও বৈশ্বিক নিরাপত্তায় প্রভাব মূল্যায়ন করেছে।

গ্যাভির প্রধান সানিয়া নিশতার বলেন, ‘এই প্রথমবার আমরা মানবিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এমন মহামারিগুলোর বিরুদ্ধে টিকা ব্যবহারের উপকারিতা সুনির্দিষ্টভাবে পরিমাপ করতে সক্ষম হয়েছি।’

‘এই গবেষণা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, টিকাদান একটি ব্যয়-সাশ্রয়ী প্রতিকার হিসেবে অতিমারির ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরক্ষা।’

এই সপ্তাহে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল (বিএমজে) গ্লোবাল হেলথ-এ প্রকাশিত গবেষণাটিতে ২০০০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৪৯টি নিম্ন-আয়ের দেশে কলেরা, ইবোলা, হাম, মেনিনজাইটিস ও ইয়েলো ফিভার- এই পাঁচটি সংক্রামক রোগের ২১০টি প্রাদুর্ভাব বিশ্লেষণ করা হয়।

ফলাফল অনুযায়ী, জরুরি টিকা প্রয়োগের ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা গড়ে প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যায়।

কিছু রোগে এর প্রভাব ছিল আরও তাৎপর্যপূর্ণ। ইয়েলো ফিভার প্রাদুর্ভাবে মৃত্যুহার কমে যায় ৯৯ শতাংশ, ইবোলা প্রাদুর্ভাবে কমে ৭৬ শতাংশ।

জরুরি টিকাদান শুধু মৃত্যুহারই কমায়নি, প্রাদুর্ভাবের ব্যাপক বিস্তার রোধেও তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, এই ২১০টি প্রাদুর্ভাবে টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে শুধু মৃত্যুহার ও অক্ষমতায় হারানো বছর প্রতিরোধ করেই প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জিত হয়েছে।

তবে এটি সম্ভবত প্রকৃত সাশ্রয়ের একটি ছোট অংশমাত্র, কারণ এতে মহামারি মোকাবেলায় খরচ, সামাজিক ও বৃহত্তর অর্থনৈতিক প্রভাব বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ সালের পশ্চিম আফ্রিকার ইবোলা মহামারি—যখন কার্যকর টিকা ছিল না—পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রায় ৫৩ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির কারণ হয়েছিল এবং সারা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এই গবেষণাটি এমন সময় প্রকাশ পেল, যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত এপ্রিলে সতর্ক করেছিল যে, হামের মতো টিকা-নির্বারিত রোগের প্রাদুর্ভাব আবার বাড়ছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে ভুল তথ্য এবং বৈশ্বিক সহায়তা কমে যাওয়াকে দায়ী করা হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে শিশুদের টিকাদান সহায়তায় কাজ করা গ্যাভি বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থসঙ্কোচনের প্রেক্ষাপটে নতুন তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছে। এর মধ্যেই গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র গ্যাভির প্রতি সমর্থন বন্ধ করার ঘোষণা দেয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে মানবতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান : মানবাধিকার কনভেনশনে বক্তারা
সিআইডির ছায়া তদন্তে ডাকাতির রহস্য উদঘাটন ও ডাকাত সর্দার গ্রেফতার
শহিদুল আলম বাংলাদেশের অবিচল মনোবলের এক উজ্জ্বল প্রতীক : প্রধান উপদেষ্টা
নৌপরিবহন উপদেষ্টার সাথে আইএমও’র মহাসচিবের বৈঠক
ঢাবিতে অনুষ্ঠিত হলো  দুই দিনব্যাপী  জাতীয় বিতর্ক উৎসব
আইনজীবী ফোরামের নেতাদের সঙ্গে পিরোজপুর জেলা বিএনপির মতবিনিময়
ডিএমপির বিশেষ অভিযানে ১৪ জন গ্রেফতার
কন্যাশিশু নির্যাতন ও সহিংসতা থেকে উত্তরণে ১১টি সুপারিশ তুলে ধরেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে গত চার দিনে ডিএমপির ৫,০৯৯টি মামলা
মহানবী (সা.)-এর সীরাতের প্রামাণ্য উপস্থাপন মানুষের অন্তরে প্রোথিত থাকবে : ধর্ম উপদেষ্টা
১০