ঢাকা, ৩০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে আন্তঃসীমান্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘ সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের’ অভিযোগ এনেছে। দেশটির অভিযোগ, কম্বোডিয়ান সেনারা রাতভর সীমান্তে থাই বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে।
ব্যাংকক থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়।
গত পাঁচ দিন ধরে চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৪৩ জন নিহত হওয়ার পর মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছিল দুই দেশ। ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে থাকা একটি প্রাচীন মন্দিরকে কেন্দ্র করে পুরনো বিরোধ থেকেই এই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দেশটির সিসাকেট প্রদেশে থাই সেনারা বুধবার সকাল পর্যন্ত কম্বোডিয়ার ছোট অস্ত্রের গুলি এবং গ্রেনেড হামলার শিকার হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, ‘এটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
সরকারের মুখপাত্র জিরাইউ হুয়াংসাবও রাতভর সংঘর্ষের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘থাই বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে এবং স্থানীয় সময় সকাল ৮টা (বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা) থেকে সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
অন্যদিকে, কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দেশটির দাবি, এই চুক্তি ছিল একটি মানবিক প্রয়াস, যার ফলে সীমান্ত অঞ্চল থেকে তিন লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
এএফপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, তিনি বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষের সময় কামানের গোলার শব্দ শুনলেও, যুদ্ধবিরতির শুরু থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত কোনও বিস্ফোরণের শব্দ পাননি।
এখনো নাজুক পরিস্থিতি: যুদ্ধবিরতি শুরু হয় মঙ্গলবার ভোরে। কিন্তু থাইল্যান্ড অভিযোগ করে, কম্বোডিয়ার অব্যাহত আক্রমণ শান্তিপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং ‘পারস্পরিক আস্থার উপর আঘাত হানছে’।
চুক্তির আওতায় সীমান্তে উভয় পক্ষের কমান্ডারদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। থাই সেনাবাহিনী জানায়, উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে তারা সৈন্য চলাচল ও পুনর্বহাল বন্ধে একমত হয়েছে।
তবে ব্যাংককের সীমান্ত সংকট কেন্দ্রের মুখপাত্র মারাতি নালিতা আন্দামো সতর্ক করে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির প্রাথমিক দিনগুলোতে পরিস্থিতি এখনও ভঙ্গুর।’
থাইল্যান্ড জানিয়েছে, সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত তাদের ১৫ জন সেনা ও ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে আটজন বেসামরিক ও পাঁচজন সামরিক নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
ফরাসি উপনিবেশিক প্রশাসনের ১৯০৭ সালে নির্ধারিত এক অস্পষ্ট সীমান্তের জেরেই এই বিরোধের সূত্রপাত।
২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ে এই সীমান্ত দ্বন্দ্বে ২৮ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।
শেষ পর্যন্ত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে মালয়েশিয়ায় একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দুই দেশই ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি এড়িয়ে একটি বাণিজ্য চুক্তির আশায় সম্মত হয়।