ঢাকা, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে সপ্তাহান্তে আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর একের পর এক শক্তিশালী ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনে (আফটারশক) নতুন করে আরও কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে এবং বেশ কিছু এলাকায় অতিরিক্ত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে শুক্রবার তালেবান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
জালালাবাদ (আফগানিস্তান) থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার সকালে পাঁচটি অগভীর আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫.৬। কাঁপুনি অনুভূত হয়েছে কাবুলসহ প্রতিবেশী পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মোহাম্মদ হাম্মাদ এএফপিকে জানান, কুনার, নাঙ্গারহার ও লাগমানসহ আট প্রদেশে আফটারশকে ১০ জন আহত হয়েছেন। প্রাথমিক ভূমিকম্পে ইতোমধ্যেই আহত ৩ হাজার ৭০০ জনের সঙ্গে নতুন করে এই সংখ্যা যুক্ত হলো।
ইউএসজিএস অনুসারে, শুক্রবার সন্ধ্যায় একই এলাকায় ৫.২ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
গত রোববার মধ্যরাতের ঠিক আগে পূর্ব আফগানিস্তানে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যা কয়েক দশকের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প।
কুনারের উত্তরে নুরিস্তান প্রদেশের বাসিন্দা ইনামুল্লাহ সাফি জানান, গভীর রাতে পরাঘাত শুরু হলে তিনি ও অন্যরা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন।
২৫ বছর বয়সী এই রাঁধুনি এএফপি’কে বলেন, সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। আমরা এখনও আতঙ্কিত, ঘরে ফিরিনি ।
তিনি আরও জানান, ঠাণ্ডা পাহাড়ি রাতে তিনি কয়েকজনের সঙ্গে কম্বলের নিচে রাত কাটান।
তিনি বলেন, কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত খুব কম সহায়তা মিলেছে, কারণ ত্রাণ কার্যক্রম মূলত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
অঞ্চলের দুর্গম সড়ক, যেগুলো ভূমিধস ও পাথর খসে পড়ায় বন্ধ হয়ে গেছে, ত্রাণ কার্যক্রমে নতুন করে জটিলতা তৈরি করছে।
দশকের পর দশক সংঘাতের পর একাধিক সঙ্কটের মুখোমুখি আফগানিস্তান বর্তমানে চরম দারিদ্র্য, মারাত্মক খরা এবং ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর পাকিস্তান ও ইরান থেকে ফেরত পাঠানো লাখ লাখ উদ্বাস্তু আফগান নাগরিকের আগমনের মতো একাধিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।