গাজায় ইসরাইলি হামলায় সাংবাদিক নিহতের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলল এপি

বাসস
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৪৪

ঢাকা, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) :  গাজার একটি হাসপাতালে গত মাসে ইসরাইলের হামলায় এপি’র একজন সহকর্মীসহ পাঁচ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হওয়ার ঘটনায় ইসরাইলের ব্যাখ্যা নিয়ে শুক্রবার প্রশ্ন তুলেছে মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, গত ২৫ আগস্ট খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরাইলি বাহিনীর টানা হামলায় ২২ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ৫ জন সাংবাদিকও ছিলেন।

এই ভয়াবহ ঘটনার পর ইসরাইলি সামরিক বাহিনী একটি ‘প্রাথমিক তদন্ত’ শুরু করে। 

এর এক দিন পর তারা জানায়, তাদের বাহিনী হামাসের একটি ক্যামেরাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল।

তবে শুক্রবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানায়, এই হামলার বিষয়ে তাদের নিজস্ব প্রতিবেদনে ‘ইসরাইলি হামলার যৌক্তিকতা ও তা পরিচালনার ধরণ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন’ উঠেছে।

এপি’র দাবি, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী যে ভবনে হামলা চালিয়েছিল, সেটির ছাদ ‘সাংবাদিকদের মিলনস্থল হিসেবে সুপরিচিত’ ছিল। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলার প্রায় ৪০ মিনিট আগেও ড্রোন ব্যবহার করে ইসরাইল ওই এলাকায় নজরদারি করছিল।

একজন সামরিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এপি জানায়, ‘সন্দেহজনক আচরণ’-এর কারণে মনে করা হয়েছিল ছাদের ক্যামেরাটি হামাস ব্যবহার করছে।

ওই কর্মকর্তা এপিকে শুধু একটি বিস্তারিত তথ্য দেন। সেটি হলো, ক্যামেরার ওপরে একটি তোয়ালে রাখা ছিল এবং এর অপারেটরকে দেখা যাচ্ছিল না। এটিকে ইসরাইল পরিচয় লুকানোর চেষ্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করে।

এপি জানায়, ওই ক্যামেরাটি আসলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ভিডিও সাংবাদিক হুসাম আল-মাসরির ছিল। ‘হুসাম তার সরঞ্জামকে তীব্র রোদ ও ধুলোবালি থেকে রক্ষা করার জন্য নিয়মিত সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতেন।’

এপি আরো জানায়, আল-মাসরি প্রথম হামলাতেই নিহত হন। তিনি নিয়মিত ওই জায়গা থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতেন। তাই হামলার ঠিক আগে এলাকাটির ওপর দিয়ে যে ইসরাইলি ড্রোনটি উড়ে গিয়েছিল, সেটির তাকে শনাক্ত করতে পারা উচিত ছিল।

মার্কিন এই সংবাদ সংস্থা আরো জানায়, ‘আল-মাসরি যেখানে নিহত হয়েছেন, সেখানে দ্বিতীয় কোনো ক্যামেরার অস্তিত্বের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’

শুক্রবার এপি জানায়, আগস্টের শেষের দিকের ওই হামলাগুলো নিয়ে ইসরাইলের আরো কিছু ‘অস্বস্তিকর সিদ্ধান্ত’ তারা খুঁজে পেয়েছে।

এপি বলেছে, ‘প্রথম হামলার পরপরই ইসরাইলি বাহিনী একই জায়গায় আবার আঘাত হানে। ততক্ষণে আহতদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসক ও জরুরি কর্মীরা সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন এবং সাংবাদিকরাও খবর সংগ্রহ করতে ছুটে এসেছিলেন।’

এপি আরো জানায়, এর ফলে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘ডাবল-ট্যাপ’ হামলার অভিযোগ উঠেছে। 

ডাবল-ট্যাপ হচ্ছে এমন একটি কৌশল, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে হতাহতের সংখ্যা বাড়ানো। এই ধরনের হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য করা হতে পারে।

এপি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, তাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী ওই হাসপাতালে হামলার জন্য ‘উচ্চ বিস্ফোরক ট্যাংক শেল’ ব্যবহার করে।

সংবাদ সংস্থাটি জানায়, ‘সব মিলিয়ে চারবার হাসপাতালটিতে হামলা চালানো হয়েছে। 

এপির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতিবারই কোনো রকম সতর্কতা ছাড়া হামলা করা হয়েছে।

ওই হামলায় মারিয়াম নামের এক সাংবাদিক নিহত হন। যিনি এপি ও অন্যান্য সংবাদ সংস্থার জন্য কাজ করতেন।

এপি’র প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে এএফপি যোগাযোগ করলে ইসরাইলি সেনাবাহিনী হামলার পরদিনের এক বিবৃতির কথা উল্লেখ করে। 

ওই বিবৃতিতে বলা হয়, সেনাপ্রধান ‘কিছু ফাঁক-ফোকর’ আরো বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। যার মধ্যে ‘হামলার জন্য অনুমোদিত গোলাবারুদ’ এবং ‘মাঠে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া’র বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনায় জাপান অস্বীকৃতি জানালে সরকার নতুন অপারেটর খুঁজবে 
সাতক্ষীরা সীমান্তে ভারতীয় বিভিন্ন মালামাল জব্দ 
সাইবার নিরাপত্তা আইন এখন অনেক সক্রিয় : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
ময়মনসিংহে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু 
মেধাভিত্তিক নিয়োগ হলে নিয়োগপ্রাপ্ত সকলেই দেশের সম্পদ হবে : আসিফ মাহমুদ
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঝটিকা মিছিল, আওয়ামী লীগের ৯ জন গ্রেফতার
আগামীকাল নেত্রকোনায় দুদকের ১৮৩তম গণশুনানি
রাবিতে এডুকেশন ক্লাবের ২ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক গবেষণা সম্মেলন শুরু
অবৈধ মাদকদ্রব্য সীসা বিক্রি : সেলিম প্রধানসহ ৯ জন কারাগারে
শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংস করেছে:  শামসুজ্জামান দুদু
১০