উগান্ডার যুদ্ধবাজ কোনির বিরুদ্ধে আইসিসিতে শুনানি শুরু

বাসস
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:০১

ঢাকা, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)তে আজ মঙ্গলবার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে উগান্ডার নৃশংস বিদ্রোহী নেতা জোসেফ কোনির বিরুদ্ধে শুনানি শুরু করেছে। 

২০০৫ সালে আইসিসি কর্তৃক অভিযুক্ত প্রথম সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধী ছিলেন কোনি এবং তাকে খুঁজে বের করার জন্য কয়েক দশকের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর আদালতে তার অনুপস্থিতিতে প্রথম শুনানি।  

দ্য হেগ থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

কোনির বিরুদ্ধে ২০০২ সালের জুলাই থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত উত্তর উগান্ডায় হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, নির্যাতন, দাসত্ব ও যৌন দাসত্বসহ ৩৯টি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। 

তার নেতৃত্বাধীন লর্ডস রেজিস্ট্যান্স আর্মি (এলআরএ) হাজার হাজার মানুষকে হত্যা ও অপহরণের দায়ে অভিযুক্ত।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, তার নেতৃত্বাধীন এলআরএ বিদ্রোহে এক লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ৬০ হাজার শিশু অপহৃত হয়েছিল।  

এই দলটি বর্বরতার জন্য একটি উপাধিতে পরিণত হয়েছিল, পালিয়ে আসা ব্যক্তিরা অন্যদের কুপিয়ে হত্যা করতে বাধ্য করা, এমনকি কামড়ে হত্যা করা, নরমাংসভক্ষণ এবং রক্ত পান করার মতো ভয়াবহতার বিবরণ দিয়েছিল।

এলআরএ যোদ্ধারা এভারলিন আয়োর পাঁচ বছর বয়সে তার স্কুলে আক্রমণ করেছিল। এখন ৩৯ বছর বয়সী, সে হেগের আইসিসি আদালত থেকে অনেক দূরে অবস্থিত গুলু শহর থেকে তার রেডিওতে বিচারের কার্যক্রম শোনার পরিকল্পনা করছে।

আয়ো এএফপিকে বলেন, বিদ্রোহীরা তার স্কুলে হামলা চালিয়ে আমাদের শিক্ষকদের হত্যা করেছিল এবং বড় ড্রামে রান্না করেছিল এবং আমাদের তাদের দেহাবশেষ খেতে বাধ্য করা হয়েছিল ।

এলআরএ-এর ভয়াবহতা এড়াতে প্রতি রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে যেত এমন হাজার হাজার শিশুর মধ্যে একজন ছিলেন আয়ো। তথাকথিত ‘রাত্রিযাত্রী’ হয়ে ওঠে তিনি।

আয়ো এএফপিকে বলেন, অনেক সময়, গ্রামে ফিরে আসার পর, আমরা রক্তে ভেজা মৃতদেহ দেখতে পেতাম। ছোটবেলায় রক্ত দেখে আমার চোখ ব্যথিত হত। অনেক বছর ধরে, আমি ভালোভাবে দেখতে পাই না। আমি শুধু রক্তই দেখতে পাই।

মঙ্গলবার অভিযোগের নিশ্চয়তা শুনানিতে প্রসিকিউটররা কোনির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরবেন। 

শুনানির পর, আইসিসির বিচারকরা সিদ্ধান্ত নেবেন, অভিযোগগুলো বিচারের যোগ্য কিনা। এই প্রক্রিয়াা ৬০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

কোনির আইনজীবী দল এই শুনানি সময়, অর্থ ও শ্রমের অপচয় হিসেবে বর্ণনা করেছে। তবে প্রসিকিউটররা মনে করেন, যদি কোনিকে কখনো হ্যাগে আনা যায়, তবে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা হবে।

জাতিসংঘের ২০২৪ সালের জুনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনি সুদান ছেড়ে কেন্দ্রীয় আফ্রিকায় অবস্থান করছে। 

সর্বশেষ তার খোঁজ পাওয়া যায় ২০০৬ সালে।  তখন তিনি পশ্চিমা সাংবাদিককে বলেছিলেন, ‘আমি কোনও সন্ত্রাসী নই, এলআরএ-এর নৃশংসতার গল্প হলো প্রোপাগান্ডা। বর্তমানে তিনি বেঁচে আছেন কি না তা অজানা।

এলআরএ-এর শিকার স্টেলা অ্যাঞ্জেল লানাম বলেন, যদিও আমরা অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তবে আশা হারাতে পারি না। 

তিনি বলেন, ‘সরকার বা কোনি কি আমাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে পারবে? না। তবে অন্তত আমি ন্যায়বিচার পাব।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় সিরিজ জয়ে চোখ দক্ষিণ আফ্রিকার
এশিয়া কাপে নিজেদের শতভাগ দিতে প্রস্তুত দল : লিটন
সাতক্ষীরা সীমান্তে ভারতীয় বিভিন্ন মালামাল জব্দ
বিজিবির অভিযানে সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে ভারতীয় শাড়ি ও ওষুধসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ
সুনামগঞ্জের সুরমা ইউনিয়ন বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
সাংবাদিক তরিকুলের মৃত্যুতে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার শোক
নারীর অবদান সমূহ দৃশ্যমানে হতে হবে : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী বায়রু’র পদত্যাগ
সুদানের খার্তুমে ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে আরএসএফ
শেরপুরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ
১০