ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : প্রিন্স হ্যারি বুধবার লন্ডনে ক্লারেন্স হাউসে তার বাবা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে হ্যারির পুনর্মিলনের আহ্বান জানানোর পর প্রায় ১৯ মাসের দূরত্বের অবসান ঘটিয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
লন্ডন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের মতে, ২০২০ সালে রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নকারী হ্যারি রাজার সঙ্গে একান্ত চায়ের জন্য দেখা করেন। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির পর এটি তাদের প্রথম সাক্ষাৎ।
রাজা লন্ডনের বাসভবনে ফেরার পরপরই হ্যারিকে কালো গাড়িতে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
এএফপির প্রতিবেদক জানান, ক্লারেন্স হাউসে প্রবেশের এক ঘণ্টারও কম সময় পর হ্যারির গাড়ি বের হয়ে যান। পরে তিনি ইনভিক্টাস গেমস ফাউন্ডেশনের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
বাকিংহাম প্যালেস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সংক্ষিপ্ত এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী জল্পনার অবসান ঘটল, বুধবার রাজা স্কটল্যান্ড থেকে লন্ডনে ফেরার পর যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল। রাজা বৃহস্পতিবার পুনরায় স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলে ফিরে যাবেন।
গত বছর ক্যানসারের ঘোষণা দেওয়ার পর হ্যারি দ্রুত যুক্তরাজ্যে ফিরে আসেন। তখনও তাদের দেখা হয় ক্লারেন্স হাউসে। যা ৪৫ মিনিটেরও কম স্থায়ী ছিল। পরদিনই হ্যারি ক্যালিফোর্নিয়ায় ফেরেন।
মে মাসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হ্যারি জানান, চলমান একাধিক মামলা ও রাজপরিবারকে নিয়ে তার প্রকাশ্য অভিযোগের কারণে তারা কোনো যোগাযোগ রাখছেন না।
তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, তাদের পুনর্মিলন হবে।
টানাপোড়েনের সম্পর্ক:
তবে সিংহাসনের উত্তরসূরি বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে হ্যারির সম্পর্ক এখনো শীতল। উইলিয়াম ও হ্যারি দুজনেই সোমবার উইন্ডসরের ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ছিলেন। সেদিন হ্যারি তার দাদী রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান।
রানি ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মারা যান।
তিন দিনের সফরে হ্যারির একাধিক দাতব্য কর্মসূচি রয়েছে। তার সঙ্গে স্ত্রী মেগান ও সন্তানরা কেউ আসেননি। এই সফরে তিনি একাই এসেছেন।
মে মাসে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হ্যারি বলেছিলেন, যুক্তরাজ্য সরকার তার পুলিশি নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়ায় তিনি পরিবারকে নিয়ে ব্রিটেনে আসতে নিরাপদ মনে করেন না।
বুধবার লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের সেন্টার ফর ব্লাস্ট ইনজুরি স্টাডিজ সফরে গিয়ে তিনি গাজা ও ইউক্রেনের আহত শিশুদের জন্য ৫ লাখ ডলার অনুদানের ঘোষণা দেন।
এই অর্থ আহত শিশুদের চিকিৎসা ও কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সরবরাহে সহায়তা করতে তার ও মেগানের প্রতিষ্ঠিত আর্কওয়েল ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দেওয়া হবে।
এক বিবৃতিতে হ্যারি বলেন, গাজায় এখন পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিশু অঙ্গহানির শিকার। কোনো একক সংস্থা একা এ সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।
গত বছর থেকে হ্যারি যুক্তরাজ্যে আরও তিনবার এলেও তার বাবার সঙ্গে দেখা হয়নি। এমনকি একবার মাত্র তিন কিলোমিটার দূরত্বে থেকেও তাদের সাক্ষাৎ হয়নি।
২০২০ সালে রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার পর স্ত্রী মেগানকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস শুরু করার পর থেকে হ্যারি একাধিকবার রাজপরিবারের প্রকাশ্য সমালোচনা করেছেন।
তার আত্মজীবনী এবং তার আত্মকথামূলক স্মৃতিকথা ‘স্পেয়ার’-এ তিনি উইলিয়াম ও তার স্ত্রী কেটসহ রাজপরিবারের নানা বিষয়ে কড়া সমালোচনা করেন।