নতুন ঋণের ধাক্কায় ফ্রান্সের ক্রেডিট রেটিং কমিয়েছে ফিচ

বাসস
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:১০

ঢাকা, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ফ্রান্সের প্রসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও চাপে থাকা দেশের সরকারি অর্থনীতি ঠিক করার উপায় নিয়ে মতবিরোধে জর্জরিত অবস্থায় শুক্রবার ফিচ এজেন্সি ফ্রান্সের ক্রেডিট রেটিং কমিয়েছে।

প্যারিস থেকে এএফপি এ খবর জানায়। 

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বভৌম ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক সক্ষমতা মূল্যায়নের শীর্ষ বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রেটিং এজেন্সি ফিচ, ফ্রান্সের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা কমিয়ে  ‘এএ-’ থেকে ‘এ+’ এ নামিয়ে এনেছে। 

ফিচ আরও জানিয়েছে, জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, ফ্রান্সের ঋণের এই বোঝা ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়তেই থাকবে।

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু সংসদে আস্থা ভোটে হেরে পদত্যাগ করার মাত্র চার দিন পর এই সিদ্ধান্ত আসে। 

তিনি উদ্ভূত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘাটতি ও ঋণ কমাতে বাজেটে বড় ধরনের ব্যয় সংকোচনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

এ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় বাইরু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ফ্রান্স এমন একটি দেশ, যেখানে  এলিটরা সত্যকে অস্বীকার করতে নেতৃত্ব দেয় এবং শেষ পর্যন্ত এর মাশুল দিতে বাধ্য হয়। 

এই রেটিং কমে যাওয়া নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকোর্নুর জন্য আরও জটিলতা তৈরি করবে।

লেকোনু সম্ভবত সংখ্যালঘু সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে আগামী বছরের বাজেট প্রণয়ন করবেন।

বিদায়ী অর্থমন্ত্রী এরিক লম্বার্ড সংস্থার সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও ফরাসি অর্থনীতির ‘মজবুত ভিত্তি’র ওপর জোর দিয়েছেন।

সাধারণত কোনো দেশের ক্রেডিট রেটিং কমে গেলে বিনিয়োগকারীরা ঋণপত্র কেনার সময় অতিরিক্ত ঝুঁকি প্রিমিয়াম দাবি করে। 

তবে কিছু আর্থিক বিশেষজ্ঞের মতে, ফরাসি ঋণবাজারে এ রেটিং কমার সম্ভাবনা আগেই প্রতিফলিত হয়েছে।

গত মঙ্গলবার ফ্রান্সের ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের আয় (ইয়িল্ড) বেড়ে ৩.৪৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল, যা ইউরোজোনের দুর্বলতম দেশগুলোর একটি ইতালির হারের কাছাকাছি।

অনিশ্চিত দিগন্ত:

ঋণের উপর সুদ পরিশোধে বাড়তি ব্যয় ফ্রান্সের আর্থিক পরিস্থিতিকে আরও সংকটে ফেলতে পারে। 

বাইরু সতর্ক করেছিলেন যে, ঋণের স্তর ইতোমধ্যেই ‘অসহনীয়’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

সংসদে মাখোঁর দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায়, তাদের ব্যয় সংকোচন ও কর বৃদ্ধির পরিকল্পনা দুর্বল হতে পারে, যা লেকোর্নুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকেও ঝুঁকিতে ফেলবে।

গত বছর ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫.৮ শতাংশ এবং ঋণ ১১৩ শতাংশ ছিল। ইউরোজোনের সীমা যথাক্রমে ঘাটতির জন্য ৩ শতাংশ এবং ঋণের জন্য ৬০ শতাংশ।

ফিচের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ঋণ জিডিপির ১১৩.২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৭ সালে ১২১ শতাংশে পৌঁছাবে। এরপরও ঋণ স্থিতিশীল রাখার কোনো স্পষ্ট পথ নেই।

সংস্থাটি সতর্ক করেছে, ফ্রান্সের ঋণ দ্রুত বাড়তে থাকলে নতুন কোনো অর্থনৈতিক ধাক্কার জবাব দেওয়ার সক্ষমতা আরও সীমিত হবে।

প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল আগামী নভেম্বরে ফ্রান্সের ঋণ রেটিং হালনাগাদ করবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
সুদানের এল-ফাশারে আরএসএফ ড্রোন হামলায় ৩০ জন নিহত
মেক্সিকোতে ভারী বৃষ্টিপাতে ২৮ জনের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গায় দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
যুক্তরাষ্ট্রের আইডাহোতে কাতারের বিমান ঘাঁটি নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি
হাইতিতে অপুষ্টির ঝুঁকিতে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ: জাতিসংঘ প্রতিবেদন
মার্কিন বিস্ফোরক কারখানায় বিস্ফোরণে নিখোঁজ ১৯
পিসিএ সমঝোতা দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ-ইইউ ঐকমত্য
চুয়াডাঙ্গা বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
দিনাজপুরে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন,সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় 
লিবিয়ায় আগস্ট মাসে জাতিসংঘ মিশনে রকেট হামলার ঘটনায় আটক ২
১০