ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) চলতি সপ্তাহের নীতিনির্ধারণী বৈঠকে দুর্বল চাকরি বাজারের কারণে এ বছরের প্রথম সুদের হার কমানোর ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে বৈঠকটিকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করায় স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
খবর এএফপি’র।
ডিসেম্বরে সর্বশেষ এই হার কমানোর পর থেকে ফেড সুদের হার ৪.২৫ থেকে ৪.৫০ শতাংশ সীমার মধ্যে ধরে রেখেছে, যাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ব্যাপক শুল্কের কারণে সৃষ্ট মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা যায়।
বিশ্লেষকরা এখন ব্যাপকভাবে আশা করছেন, বুধবার শেষ হওয়া দুই দিনের বৈঠকে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট হারে সুদ কমাবে।
আটলান্টিক কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বিভাগের চেয়ার জশ লিপস্কি বলেন, মজার ব্যাপার হলো, ফেড কী করবে তা খুব পরিষ্কার। তারপরও বৈঠকটিকে ঘিরে প্রচুর নাটকীয়তা দেখা দিয়েছে।
আগস্টে ফেড গভর্নর অ্যাড্রিয়ানা কুগলারের আগাম পদত্যাগে সৃষ্টি হওয়া শূন্যপদে, ট্রাম্প দ্রুত তার প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা স্টিফেন মিরানকে মনোনীত করেছেন।
রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেট অনুমোদন দিলে, মিরান পরবর্তী ফেড বৈঠকেই যোগ দিতে পারেন।
মন্দার ঝুঁকি:
বুধবারের বৈঠকে বাজারের দৃষ্টি থাকবে ফেডের ভবিষ্যৎ সুদ কমানোর গতি ও মাত্রা নিয়ে।
কেপিএমজি’র প্রধান অর্থনীতিবিদ ডায়ান স্বংক আশা করছেন, এটি একটি শিথিলীকরণ চক্রের সূচনা করবে। যদিও ফেড এখনই পূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিতে চাইবে না।
তবে সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, আগস্টে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) বেড়ে ২.৯ শতাংশে পৌঁছেছে, যা বছরের সর্বোচ্চ।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেন, মুদ্রাস্ফীতির চাপ পুরোপুরি কমেনি।
ওয়েলস ফার্গোর এক নোটে বলা হয়েছে, চাকরি বাজার ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। চাকরি প্রায় স্থবির, কর্মীদের আস্থা হ্রাস পাচ্ছে ও বেকারত্ব হার অনেকের মতে, পূর্ণ কর্মসংস্থানের সীমা অতিক্রম করেছে। এর ফলে মন্দার ঝুঁকি আরও বেড়েছে।
স্টিফেন মিরান ফেডে যোগ দিলে হার কমানোর মাত্রা নিয়ে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির (এফওএমসি) মধ্যে ২৫ বেসিস পয়েন্ট, ৫০ বেসিস পয়েন্ট অথবা অপরিবর্তিত রাখার মধ্যে বিভাজন হতে পারে।
লিপস্কি বলেন, এটি এমন কিছু নয়, যা আমরা ফেডের কাছ থেকে অভ্যস্ত। কারণ ঐতিহাসিকভাবে এরা প্রায় সর্বসম্মতভাবে ভোট দেয়।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, ফেডের গঠন দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। আঞ্চলিক ১২টি ফেড ব্যাংকের প্রেসিডেন্টদের প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পুনর্নিয়োগ করতে হয়। যদিও অতীতে কোনো পরিবর্তনের নজির নেই।
লিপস্কি বলেন, বাজার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিয়ে ঝুঁকিগুলোকে কম করে মূল্যায়ন করছে। অথচ এর প্রভাব ভবিষ্যতের মুদ্রানীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।