ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : কলম্বিয়ার বামপন্থী প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোর ভিসা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, নিউইয়র্কের এক রাস্তায় ফিলিস্তিনের সমর্থকদের বিক্ষোভ চলাকালে ‘উস্কানিমূলক কার্যকলাপের’ কারণে তার ভিসা বাতিল করা হবে।
প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো গতকাল শনিবার বোগোতায় ফিরে গেছেন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে ছিলেন পেত্রো। সেখানে তিনি মঙ্গলবার এক বক্তব্যে তীব্র ভাষায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনকে সমালোচনা করেন এবং ক্যারিবিয়ান সাগরে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকায় সাম্প্রতিক মার্কিন হামলার বিষয়ে একটি অপরাধমূলক তদন্তের আহ্বান জানান।
পেত্রো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তিনি শুক্রবার একটি বড় সমাবেশে মেগাফোন ব্যবহার করে বলছেন, ‘বিশ্বের সব দেশ যেন একত্রে একটি সেনাবাহিনী গঠন করে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর চেয়েও বড়।’
তিনি বলেন, ‘এ কারণেই, নিউইয়র্ক থেকে আমি মার্কিন সেনাবাহিনীর সব সৈনিকদের আহ্বান জানাচ্ছি— মানবতার দিকে রাইফেল তাক করবেন না। ট্রাম্পের আদেশ অমান্য করুন! মানবতার আদেশ মানুন।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানায়, পেত্রো ‘নিউইয়র্ক সিটির রাস্তায় দাঁড়িয়ে মার্কিন সৈনিকদের আদেশ অমান্য করতে ও সহিংসতা উসকে দিতে উৎসাহিত করেছেন।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায় , ‘আমরা প্রেসিডেন্ট পেত্রোর ভিসা তার দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে বাতিল করা হবে।’
নিউইয়র্ক ত্যাগ করার পর বোগোতায় ফিরে পেত্রো বলেন, তিনি নিজেকে ‘বিশ্বের একজন মুক্ত মানুষ’ মনে করেন।
তিনি শনিবার ভোরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমি বোগোতায় পৌঁছেছি। আমার আর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ভিসা নেই। তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’
গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন কলম্বিয়াকে মাদকবিরোধী লড়াইয়ে মিত্র হিসেবে স্বীকৃতি বাতিল করেছে। যদিও এখনো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি।
যদিও কলম্বিয়া ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তবে দেশটির প্রথম বামপন্থী নেতা হিসেবে পেত্রোর নেতৃত্বে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
কলম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর্মান্দো বেনেদেত্তি শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ভিসা বাতিল করা উচিত ছিল, পেত্রোর নয়।’
বেনেদেত্তি আরো বলেন, ‘তবে যেহেতু সাম্রাজ্য (যুক্তরাষ্ট্র) নেতানিয়াহুকে রক্ষা করে, তাই তারা শুধুমাত্র সেই প্রেসিডেন্টকে শাস্তি দিচ্ছে, যিনি তার মুখের সামনে সত্য বলার সাহস দেখিয়েছেন।’