ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউরোপ বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তবে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব মোকাবিলায় নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে আরো পদক্ষেপ নিতে হবে বলে সোমবার সতর্ক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিবেশ সংস্থা।
কোপেনহেগেন থেকে এএফপি জানায়, এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ও বায়ুদূষণ কমানোর ক্ষেত্রে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হলেও ইউরোপের সামগ্রিক পরিবেশগত অবস্থা ‘ভালো নয়’।
ইউরোপিয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি (ইইএ) ৩৮টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের ইইএ পরিচালক লিনা ইয়ালা-মোনোনেন বলেন, টেকসই উৎপাদন ও ভোগের অভ্যাস না থাকায় জৈববৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ইউরোপে পানিসম্পদও ‘তীব্র চাপে রয়েছে। যার ফলে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পানি সংকটে ভুগছে’।
প্রতি পাঁচ বছর অন্তর প্রকাশিত এ জলবায়ু মূল্যায়ন প্রতিবেদনটি এমন এক সময়ে প্রকাশ করা হয়েছে, যখন জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০৩৫ সালের জন্য নতুন গ্রিনহাউস গ্যাস হ্রাস পরিকল্পনা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, ২৭ সদস্যের জোটে এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
এছাড়া, ১৯৯০ সালের তুলনায় ২০৪০ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ নিঃসরণ হ্রাসে ইউরোপীয় কমিশনের উচ্চাভিলাষী প্রস্তাবেও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি ইইউ।
তবে ১৯৯০ সালের পর থেকে ইইউ’র গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ইতোমধ্যেই ৩৭ শতাংশ কমেছে, যা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় দূষণকারীদের তুলনায় এগিয়ে। এর মূল কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো এবং ২০০৫ সালের পর থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি।
ইইএ জানায়, ইউরোপীয় সবুজ চুক্তির আওতায় গৃহীত টেকসই নীতিগুলোর বাস্তবায়নে আরো অগ্রসর হতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপে প্রকৃতির অপব্যবহার, অতিরিক্ত ব্যবহার ও জৈববৈচিত্র্য হ্রাসের মুখে রয়েছে। পানি দিন দিন সংকটাপন্ন হচ্ছে, ভূমিরও অতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে। সংরক্ষিত আবাসস্থলের ৮১ শতাংশ খারাপ বা অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মাটি ক্ষয়প্রাপ্ত এবং ৬২ শতাংশ জলাশয়ের অবস্থা ভালো নয়।
জলবায়ু পরিবর্তন পানির ঘাটতি বাড়াচ্ছে। ইইএ বলেছে, উন্নত প্রশাসন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, পানির পুনঃব্যবহার এবং জনসচেতনতার মাধ্যমে কৃষি, পানি সরবরাহ ও জ্বালানি উৎপাদন খাতে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পানি সাশ্রয় সম্ভব।