ঢাকা, ৪ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): মার্কিন সরকারের অচলাবস্থা আগামী সপ্তাহেও অব্যাহত থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান প্রস্তাবিত অর্থায়ন পরিকল্পনা চতুর্থ দফায় খারিজ করে দেয় সিনেট।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
বুধবার থেকে ফেডারেল সংস্থাগুলো তহবিলহীন অবস্থায় রয়েছে। ফলে বহুমুখী জনসেবা কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। সরকারি কার্যক্রম চালু রাখার অর্থায়ন নিশ্চিতে কংগ্রেসের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
ওয়াশিংটন মনুমেন্টের মত পর্যটনকেন্দ্রগুলোও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কর্মসংস্থান সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। পাশপাশি কিছু সরকারি ওয়েবসাইটও কাজ করছে না। তবে চলমান অচলাবস্থার প্রভাব এখনো সরকারের সব বিভাগে পড়েনি।
তহবিল সংকট আরো ঘনীভূত হওয়ায় প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার কর্মীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অচলাবস্থা শেষে তাদের বেতনভাতা পরিশোধ করা হবে।
এমন পরিস্থিতিতেও সপ্তাহান্তে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে অধিবেশন রাখার পরিকল্পনা নেই সিনেট নেতাদের। যার অর্থ শুক্রবারের স্বল্পমেয়াদি তহবিল সমাধান ভোটই ছিল সংকট সমাধানে চলতি সপ্তাহের শেষ সুযোগ।
জানা গেছে, বর্তমান অচলাবস্থার মূল কারণ ডেমোক্র্যাটদের দাবি আদায়। তারা স্বাস্থ্যসেবা খাতে ভর্তুকি বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। ডেমোক্র্যাটদের যুক্তি এটি করা না হলে, লাখ লাখ নিম্নবিত্ত আমেরিকানকে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউসের নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে সংখ্যগরিষ্ঠ রিপাবলিকানদের হাতে। কিন্তু বাজেট বিল পাস করতে ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন প্রয়োজন পড়ে। তবে এবার তারা এই ইস্যু সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
ট্রাম্প-সমর্থিত অর্থায়ন প্রস্তাব আটকে রিপাবলিকানদের চাপে ফেলতে চাইছে ডেমোক্র্যাটরা।
অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের দেশের ধ্বংস চাইছেন।
‘এই উন্মাদনা বন্ধ হতে হবে,’ বলে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও রিপাবলিকানরা মার্কিন জনগণের স্বার্থে অবিলম্বে সরকারি কার্যক্রম চালু করতে সহায়তার জন্য ডেমোক্র্যাটদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
দ্রুত সমাধানের সম্ভাবনা নিয়ে হতাশা সত্ত্বেও কিছু আশার আলো দেখছেন রিপাবলিকানরা। তারা কংগ্রেসে আশা প্রকাশ করেছেন যে, সাম্প্রতিক এই ব্যর্থতা কিছু মধ্যপন্থী বিরোধী সদস্যদের তাদের দলে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
রিপাবলিকান সিনেট নেতা জন থুন বলেন, আশা করি সপ্তাহান্তে তারা (ডেমোক্র্যাট) এ বিষয়ে ভাববেন। তখন হয়তো আলোচনার ইতিবাচক কিছু ফল আসবে, যাতে প্রয়োজনীয় ভোট পেয়ে বিলটি পাস করতে পারবো।
সমঝোতা চেষ্টা জটিল হয়ে উঠেছে ট্রাম্পের হুমকির কারণে। তিনি জানান, বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হাজার হাজার কর্মীকে স্থায়ীভাবে ছাঁটাই করা হবে। এছাড়াও ডেমোক্র্যাটদের ওপর চাপ বাড়াতে বরাদ্দ এবং সুবিধা কমানোর ঘোষণা দেন।