সিলেটে গণমিছিলে পুলিশের হামলা, শিশু ও সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ 

বাসস
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৩৬
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চব্বিশের ২ আগস্ট সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণমিছিলে হামলা করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

।। শুয়াইবুল ইসলাম ।।

সিলেট, ২ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গত বছর আজকের দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণমিছিলে হামলা করে পুলিশ। গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে ছাত্র-জনতা। এতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আখালিয়া থেকে মদিনা মার্কেট এবং পাঠানটুলা এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী ছাড়াও পথচারী শিশু ও সাংবাদিকরা গুলিবিদ্ধ হন। সেদিনের প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেন পাড়ামহল্লার বহু নারী-পুরুষ, মার্কেটের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, সেদিন ছিল শুক্রবার। জুমার নামাজের পর থেকেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীদের জমায়েত হয়। শুধু ছাত্র নয়, মিছিলে অংশ নিতে আসেন সাধারণ মানুষ। বেলা তিনটার দিকে মিছিল প্রস্তুত হলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাধা অতিক্রম করে মিছিলটি মদিনা মার্কেটের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশ তাদের উপর সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি চালায়। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কিন্তু দমে যাননি। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা প্রতিরোধ গড়ে তুললে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। আখালিয়া, মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, বাগবাড়িসহ আশেপাশের এলাকায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। শক্তি বাড়িয়ে সেদিন আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখে পুলিশ। বিশেষায়িত টিম সিআরটি ও এপিসি যোগ হয়। কিন্তু গলিতে গলিতে ছাত্র-জনতার অবস্থানের কারণে তারা ব্যর্থ হয়। রাত ৯টা পর্যন্ত চলে থেমে থেমে সংঘর্ষ।

এর মধ্যে আখালিয়া এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয় ১২ বছর বয়সী শিশু শফিক আলী। নিজেদের মিস ফায়ারে পুলিশ সদস্যরাও আহত হন। শটগানের ছররা গুলিতে বার্তা-২৪ এর সিলেট প্রতিনিধি মোশাহিদ আলীসহ আরও কয়েকজন আহত হন।

আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী তানজিনা আক্তার জানান, সেদিন পুলিশের ধাওয়ায় তারা বেশ কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী একটি বাসায় আশ্রয় নেন। পেছনে পেছনে সেখানে অভিযানে যায় পুলিশ। তখন বাসার নারীরা তাদের আশ্রয় দেন এবং সাহেদা খান নামের ষাটোর্ধ্ব এক নারী পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। তার এই মারমুখী আচরণে পুলিশ সেদিন ওই বাসায় অভিযান না চালিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ওই গলির মুখে পুলিশের অবস্থানের কারণে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী আটকা পড়েন। এক পর্যায় রাত ৯টার দিকে ওই এলাকার একটি বিয়ে বাড়ির গাড়িতে করে তারা বাড়ি ফিরে যান।

এদিন হবিগঞ্জেও আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালায় পুলিশ-ছাত্রলীগ। সেখানে নিহত হন সিলেটের মোস্তাক আহমদ (২৪)। তার বাড়ি সিলেটের টুকের বাজার এলাকায়।

এই সংঘর্ষের ধারাবাহিকতায় ২ আগস্ট দিনগত রাতে সিলেট নগরে ব্লকরেইড দিয়ে শিক্ষার্থী ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি অব্যাহত রাখে সিলেট মহানগর পুলিশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
পিআইবি’র গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায় মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত
‘কাস্টমস এবং ভ্যাট সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধির প্রায়োগিক দিক’ শীর্ষক কর্মশালা 
নীলফামারীতে ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক সমাবেশ 
শাহবাগে জুলাই যোদ্ধাদের পক্ষে-বিপক্ষে মারামারিতে দেশের মানুষ ব্যথিত হয়েছে : এ্যানি
উত্তরায় সেদিন বেধড়ক মারধর করা হয় ছাত্রীদের 
রাজধানীতে ডাকাতির ঘটনায় ৮ জন গ্রেফতার 
গোপালগঞ্জে রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস পালিত 
কিশোরগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পদযাত্রা
কক্সবাজারে অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, একই পরিবারে চারজনসহ নিহত ৫
জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অভিভাবক সমাবেশ 
১০