শিরোনাম
নেত্রকোনা, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার বহুল প্রতীক্ষিত নাগড়া সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেছে নেত্রকোনা সড়ক বিভাগ।
শহরের প্রাণকেন্দ্রে মগড়া নদীর উপর বহুল প্রতীক্ষিত নাগড়া সেতুর নির্মাণকাজ পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে।
নাগড়ায় (থানা মোড়) পুরাতন অবকাঠামোর উপর '৯০ এর দশকে একটি সরু বেইলী সেতু নির্মিত হয়েছিল। সেতুটি পুরাতন ও সরু হওয়ায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এছাড়া প্রায়শই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে উক্ত স্থানে দৃষ্টিনন্দন আর্চ ব্রীজটি নির্মিত হচ্ছে। সেতুটি নির্মিত হলে যানজট ও জনদুর্ভোগ হ্রাস পাবে।
২২.৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন এ নেটওয়ার্ক আর্চ ব্রিজটি ৫৬ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ফুটপাতসহ ১১.৮০ মিটার প্রস্থের। এ নান্দনিক ব্রিজটির কাজ বাস্তবায়ন করার সময় ধরা হয়েছে দুই বছর।
নেত্রকোনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আল নূর সালেহীন বাসসকে বলেন, "থানার মোড়ে অবস্থিত নাগড়া বেইলী সেতুটি দীর্ঘদিন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিলো। এতে যানবাহন চলাচলসহ যানজটের একটা সমস্যা ছিলো। এ ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী সেতুটি আমরা প্রতিস্থাপন করে সেখানে একটি দৃষ্টিনন্দন নেটওয়ার্ক আর্চ ব্রিজ নির্মাণের জন্যে আমরা ইতোমধ্যে কাজ আদেশ প্রদান করেছি। ব্রিজটি কনক্রিট এন্ড স্টীল টেকনোলজিস লিমিটেড নামের একটি টিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করবে, এটি শুধু সিঙ্গেল স্প্যানের হবে, নদীর মাঝখানে কোন স্প্যান হবে না, সিঙ্গেল স্প্যানের ৫৬ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি দৃষ্টিনন্দন নেটওয়ার্ক আর্চ ব্রিজ নির্মাণ করা হবে যার চুক্তি মূল্য ২২.৮২ কোটি টাকা এবং এটি আমরা আশা করছি যে আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। এ সেতুটি শহরের মূল সড়কের বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এ সেতুটি সরু থাকায়, ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় শহরে যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে।এ সেতুটি নির্মাণ করা হলে শহরের মানুষের জনদুর্ভোগ লাঘব হবে এবং পাশাপাশি সড়ক নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, আমি এখানে নিয়োগ পাওয়ার পর নেত্রকোনা পৌরসভা দাবি করেছে ব্রিজটি করে দেওয়ার জন্যে কারণ তাদের সেই টেকনিক্যাল ক্যাপাসিটি নাই।"
পরিবেশকর্মী অহিদুর রহমান বলেন "কর্মব্যস্ত একটি শহর নেত্রকোনা আর এ শহরের ভেতর দিয়ে মগড়া নদী বয়ে চলেছে এবং মগড়া নদীর উপর অতীতে যে ব্রিজগুলো করা হয়েছে সে ব্রিজগুলো নিচু করে করা হয়েছে। সেই ব্রিজগুলোর নির্মাণকাজ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এখন যে নতুন ব্রিজটি হচ্ছে থানার মোড়ে সেটি যেন উঁচু করে করা হবে।
সুশাসনের জন্যে নাগরিক (সুজন)-এর সভাপতি শ্যামলেন্দু পাল বলেন," এ ব্রিজটির নির্মাণ নিয়ে দীর্ঘদিন নেত্রকোনা পৌরসভা এবং সড়ক বিভাগের মাঝে বেশ কয়েক বছর দ্বন্দ্ব ছিলো। পৌরসভা বলে এটা আমরা করবো, সড়ক বিভাগ বলে এটা আমরাই করবো । '৯০ এর দশকে বিএনপি সরকারের সময়ে আবু আব্বাস সাংসদ থাকা অবস্থায় বেইলী সেতুটি নির্মাণ করা শুরু হয়েছিল।
সচেতন নাগরিক আলপনা বেগম বলেন, "নেত্রকোনা শহরটিকে প্যাঁচিয়ে রেখেছে এ মগড়া নদী, মা যেমন সন্তানকে আগলে রাখে ঠিক তেমনিভাবে এ মগড়া নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে কালীগঞ্জের বাজার এবং সেখান থেকে আজকের নেত্রকোনা শহর। একসময় এ নদীকে কেন্দ্র করেই বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো, শহরের সঙ্গে গ্রামের একটি অবিচ্ছিন্ন জলপথের যোগাযোগ ছিলো । আমার প্রত্যাশা ব্রিজটি যেন উঁচু করে করা হয় এবং এর নিচ দিয়ে যেন নৌকা চলাচল করতে পারে এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও করা যেতে পারে।