শিরোনাম
কুষ্টিয়া, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার মিরপুরের মামুন অর রশিদের খামারের মধু দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এ সফল উদ্যোক্তা মামুন এখন মধু মামুন নামেই সবার কাছে পরিচিত।
মাস্টার্স পাস করে চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। টাকার জন্য চাকরি হয়নি মামুনের। হতাশ না হয়ে দৃঢ় প্রত্যয় নেন তিনি, চাকরি করবেন না, চাকরি দেবেন। মাত্র ২৬শ’ টাকায় চারটি মধুর বাক্স কিনে শুরু করেন মধু সংগ্রহ। এখন তার খামারে কয়েকশ’ মৌমাছির বাক্স। গড়ে তুলেছেন ‘মিষ্টি মৌ-খামার’। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে এ খামারের মধু।
মাঠে সরিষা ক্ষেতে মানুষের কোলাহল। সরিষা ফুল থেকে মধু নিয়ে সারি সারি কাঠের বাক্সে মৌমাছির বিরামহীন ছুটে চলা। এটাই মধু মামুনের মধু সংগ্রহের প্রকল্প। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এরকম কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে তার। তার অধীনেই এখন কাজ করেন ৩০ জন। মামুন ১৯৯৭ সালে ২৬শ’ টাকায় মাত্র চারটা মৌ বাক্স নিয়ে মধু সংগ্রহ শুরু করেন। কয়েক বছরেই খাঁটি মধু বিক্রিতে মামুনের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া, স্পেন ও কোরিয়াতে মধু রপ্তানি শুরু হয়। এবছর সরিষা, কালোজিরা, ধনিয়া ও লিচু ফুলের মধু সংগ্রহের টার্গেট ২০টন। প্রতি সপ্তাহে তিন মণের বেশি মধু সংগ্রহ করেন মামুন। যার প্রতি কেজির দাম ৬০০ থেকে ১৫শ’ টাকা কেজি।
মধু মামুন জানান, মধু রিফাইন মেশিন পেলে বিদেশে মধু রপ্তানি বাড়বে। বাড়বে কর্মসংস্থান। কৃষি অফিস থেকে ঠিকমত বীজ না পাওয়ায় দিনদিন সরিষার আবাদ ছেড়ে বিষাক্ত তামাক চাষে ঝুঁকছেন চাষীরা বলেও অভিযোগ তার। এ খাতে সরকারী সহযোগিতা দেয়ার দাবিও জানান তিনি। মধু মামুনের মধু সংগ্রহের প্রকল্পে বেশ কযেকজন শিক্ষার্থীসহ কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৩০ জনের। এ কাজে সম্পৃক্ত হতে পেরে খুশি তারা। অনেকেই নিজ চোখে হারভেস্ট করা দেখে খাঁটি ও টাটকা মধু সংগ্রহ করছেন মধু মামুনের ‘মিষ্টি মৌ-খামার’ থেকে । সরিষা ক্ষেতের পাশে মধু সংগ্রহের কারণে পরাগয়নের ফলে সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন। মধু মামুনের কাছ থেকে অনেকেই প্রশিক্ষণ নিয়ে উদ্যোক্তা হচ্ছেন। এভাবেই সফল উদ্যোক্তার গল্প ছড়িয়ে পড়ুক - এমনটাই প্রত্যাশা সবার।