বাসস
  ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৬
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৩৮

ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জনজীবন, হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর ভীড়

দিনাজপুরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জনজীবন। ছবি : বাসস

দিনাজপুর, ২২ জানুয়ারি ২০২৫ (বাসস): ঘন কুয়াশার সাথে পাল্লা দিয়ে কনকনে ঠান্ডার প্রকোপে দিনাজপুরের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর ভীড়।

বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। 

হিমালয়ের কোল ঘেঁষে উত্তরের জনপদ দিনাজপুরে টানা কয়েক দিন ধরে ক্রমশই কমছে রাতের তাপমাত্রা। বইছে হিমেল বাতাস, দেখা মেলেনি সূর্যের আলোর।  

দিনাজপুর অঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোঃ তোফাজ্জল হোসেন বাসসকে জানান, আজ বুধবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সকাল ৬ টায় ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ৯২ শতাংশ এবং বাতাসের গতি বেগ ঘন্টায় ৩ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ সকালে ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে তীব্র হিমেল বাতাস। আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীতে সাধারণ মানুষ অনেকটা কাহিল হয়ে পড়েছেন। শীতের কারণে জরুরী কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। তবে শ্রমজীবী মানুষ পরিবারের চাহিদা মেটাতে অনেকেই শীত উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে ছুটছেন।

এদিকে তীব্র শীতে অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়েছে ব্যস্ততম সড়ক ও হাট বাজার গুলো। দিনের বেলা সূর্যের দেখা না মিললেও কনকনে ঠান্ডা জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। কাজে যাচ্ছেন না অনেকেই।

ভোরে হালকা কুয়াশা থাকার কারণে বিভিন্ন সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন গুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে। 

দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ আসিফ ফেরদৌস আজ বাসসকে বলেন, শীতের কারণে দিনাজপুর সদরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলার ১৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। বিশেষ করে সর্দি, কাশি, জ্বর শিশুদের নিউমোনিয়া এবং বয়স্করা ঠান্ডাজনিত ব্যথা ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডায়াবেটিক ও কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ঠান্ডাজনিত রোগ মোকাবেলায় হাসপাতালগুলোতে সেবার মান বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঔষধ সেবন ও শীতের প্রকোপ থেকে নিজেদের হেফাজতে রাখতে তাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ এবং বাতাসের গতি বেগ ঘন্টায় ৫ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে। 

এর আগে গত সোমবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়া কর্মকর্তা তোফাজ্জল বলেন, উত্তরের জনপদ দিনাজপুর অঞ্চলে গত কয়েক দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই দিনের বেলা সূর্যের আলোর প্রভাব পড়ছে না। ঘন কুয়াশায় সকাল থেকে ঢাকা থাকছে রাস্তাঘাট। দুপুরের পর কিছু সময় সূর্যের আলো দেখা গেলেও হিমেল বাতাস ও কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত মানুষ। এই অবস্থা আরো কয়েকদিন থাকবে বলে তিনি আভাস দিয়েছেন। 

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, জেলার ১৩ টি উপজেলা এ পর্যন্ত প্রায় ৩২ হাজার পিস কম্বল, ১০ হাজার পিস সোয়েটার জ্যাকেট ও ১২ হাজার পিস শিশু পোশাক বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের আহবানে জেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এবং ব্যবসায়ী ও বিত্তবানেরা প্রতিদিন শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন।