শিরোনাম
//মো.এনামুল হক//
পটুয়াখালী, ২২জানুয়ারি, ২০২৫(বাসস) : জেলায় কেঁচো সার উৎপাদন এবং কেঁচো বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা মো. মজনু প্যাদা (৩৮)।
তিনি জেলার দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় দুটি হাউজ ও দুটি রিং স্লাব দিয়ে শুরু করেন ভার্মি কম্পোস্ট(কেঁচো সার) উৎপাদন ও বানিজ্যিকভাবে কেঁচো বিক্রি। ধীরে ধীরে কেঁচো সার উৎপাদনের পরিধি বাড়িয়েছেন। বাড়ির পাশে টিনের সেড ও দোচালা পলিথিনের ঘরে দুটি হাউজ ও দুটি রিং স্থাপন করে বাণিজ্যিকভাবে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন ও কেঁেচা বিক্রি শুরু করছেন। প্রতি মাসে কেঁচো সার ও কেঁচো বিক্রি করে মজনু আয় করেন ২৫-৩০ হাজার টাকা।
সরেজমিনে কৃষি উদ্যোক্তা মজনু প্যাদার ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্ট ও কেঁেচা উৎপাদনের প্লান্ট ঘুরে দেখা যায়, সার তৈরির জন্য স্থাপন করা প্রতিটি হাউজে ৩ থেকে ৪ মণ গোবর, শাকসবজির উচ্ছিষ্ট ও কলাগাছের টুকরার মিশ্রন করে প্রতিটি রিংয়ে ৯কেজি কেঁচো ছেড়ে দেয়া হয়। তারপর চটের বস্তা দিয়ে রিংক ঢেকে রাখা হয়। এভাবে এক মাস ঢেকে রাখার পর তৈরি হয় কেঁচো সার।
কেঁেচা সার উৎপাদনের খরচ এবং লাভের বিষয় জানতে চাইলে বাসসকে মজনু বলেন, হাউজ ও রিং স্লাব এবং ঘর নির্মাণসহ মোট খরচ হয় প্রায় ১৩ হাজার টাকা। পরে চাহিদা বেরে যাওয়ায় আরও ৩০ হাজার টাকা খরচ করে হাউজ তৈরি করেছি। এক মাসে উৎপাদন হয় ২ টন কেঁচো সার। প্রতি কেজি সার ১১ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। পাশাপাশি প্রতি কেজি কেঁচো ৯’শ থেকে ১১’শ টাকা দরে বিক্রি করি। কেঁচো সার উৎপাদন করে নিজের চাহিদা পূরণ ও বানিজ্যিকভাবে বিক্রি করে আসছি। বাড়তি কেঁচো এবং সার বিক্রি করে মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করা যায়।
দশমিনা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর দশমিন উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের কমিনিউটি বেইজড কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২০-২০২১,২০২২-২০২৩ ও ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে কৃষকদের সার ও কেঁচো উৎপাদন প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। প্রদর্শনীর আওতায় ঘর নির্মাণের জন্য টিন, খুঁটি, রিং এবং কেঁচো দেওয়া হয়েছে। উপজেলায় প্রায় সরকারি ও নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় অর্ধ শতাধিক কৃষক কেঁচো সার উৎপাদন ও কেঁচো বিক্রি করে আসছেন। এছাড়া ৭০-৮০জন কৃষক বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদন ও কেঁচো বিক্রি করে আসছেন।
এদিকে মজনু প্যাদার উৎপাদিত কেঁচো সার স্থানীয় কৃষকদের কাছে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষিরা এসে মজনু প্যাদার বাড়ি থেকে সার কিনে নিয়ে চাষাবাদ করছেন।
গছানী গ্রামের কৃষক মো. কাজী সরোয়ার হোসেন জানান, মজনু প্যাদার ভার্মি কম্পোষ্ট ফসলে ব্যবহার করে ভালো ফলন পেয়েছি। আমার মতো অনেকেই এখন চাষাবাদে ভার্মি কম্পোষ্ট ব্যবহার করছেন। এতে রাসায়নিক সারের তুলনায় খরচ কম, উৎপাদন বেশি হয়।
ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাফর আহমেদ বলেন, পরিবেশ বান্ধব ভার্মি কম্পোষ্ট মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা ও মাটির উর্বরতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমেছে। ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন বাড়াতে কৃষি উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও দিক নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।