বাসস
  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১৭
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৫৩

গোপন বন্দিশালার নির্মমতার চিত্র তুলে ধরলেন চিফ প্রসিকিউটর

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ফাইল ছবি

ঢাকা, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : একটা মানুষকে পৈশাচিক ভাবে কতটা নির্মম নির্যাতন করা যায় তা গোপন বন্দিশালাগুলো পরিদর্শন না করলে বিশ্বাস করাটা কঠিন ছিল বলে উল্লেখ করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘আয়নাঘর’ নামে কুখ্যাতি পাওয়া গোপন বন্দিশালা পরিদর্শনের ভয়াবহ বর্ণনা দিয়ে বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে চিফ প্রসিকিউটর সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল তিনটি গোপন বন্দিশালা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। গুম কমিশন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়কসহ আমি (চিফ প্রসিকিউটর) বন্দিশালাগুলো পরিদর্শন করেছি এবং বীভৎসতার চিত্র আমরা দেখেছি। ‘সেখানে ইলেক্ট্রনিক শক দেওয়ার ব্যাবস্থা ছিল। বন্দীদের চোখ বেধে রাখা হত। তিন ফিট বাই তিন ফিট এবং দুই ফিট বাই দুই ফিট অমানবিক সব সেল। একটা মানুষকে পৈশাচিকভাবে কতটা নির্মম নির্যাতন করা যায় তা গোপন বন্দিশালাগুলো পরিদর্শন না করলে মানুষের পক্ষে এগুলো বিশ্বাস করাটাই কঠিন ছিল।’

গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার পদ্ধতিগতভাবে বাংলাদেশের ভিন্নমতকে দমন করার জন্য নির্যাতন ও গোপন হত্যাকে যে একটা কালচারে পরিণত করেছিল সেটা উন্মোচিত হয়েছে উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন,‘যারা এই নির্যাতন বা নির্যাতন কেন্দ্রগুলোর সাথে সম্পৃক্ত আমরা তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে চাই।’

মায়ের সাথে এক হতভাগা মেয়ের বন্দীদশার কথা তুলে ধরে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘একটা ১১ বছরের মেয়েকে তার মা’সহ তুলে নেওয়া হয়েছিল। মেয়েটির সামনে মাকে হাতকড়া দিয়ে বেধে নির্যাতন করা হয়েছে। মেয়েটির মা মোটা ছিল বলে হাতকড়া কেটে তার শরীরের মধ্যে বসে গিয়েছিল। ১১ বছরের মেয়েটাকে পাশেই চোখ বেধে রাখা হতো। বাথরুম করার সময়ও মেয়েটির মায়ের হাতকড়া খুলে দেওয়া হতো না। ১১ বছরের মেয়েসহ একজন নারী রেহাই পায়নি। পুরুষ সদস্যরা নির্যাতন করেছে। এমনকি মেয়েটির মা আজও ফিরে আসেনি। আমরা ধারণা করছি হয়ত তাকে হত্যা করে তার লাশ কোথাও ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল ১১ বছরের মেয়েটি কিন্তু চিহ্নিত করতে পেরেছে কোথায় তাদের রাখা হয়েছিল, নির্যাতন করা হয়েছিল।’

গোপন বন্দীশালার আলামত নষ্ট প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘অনেক আলামত আমরা জব্দ করেছি। তবে আমরা দেখেছি গোপন বন্দিশালা বা নির্যাতন কেন্দ্রগুলোর ব্যাপক আলামত নষ্ট করা হয়েছে।’