রংপুর, ১৩ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় ভিটামিন ‘এ’প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৫ উপলক্ষে রংপুর সিটি কর্পোরেশনসহ জেলার তিন পৌরসভা ও আট উপজেলায় দুই হাজার একশ’ ২৯টি কেন্দ্রে চার লাখ ৯১ হাজার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
এর মধ্যে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ৩৩টি ওয়ার্ডের দুশ’ ৯৭টি অস্থায়ী কেন্দ্রে এক লাখ ৩৩ হাজার পাঁচশ’ শিশু এবং জেলার বাকি আট উপজেলায় এক হাজার আটশ’ ৩২টি কেন্দ্রের মাধ্যমে তিন লাখ ৫৭ হাজার পাঁচশ’ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তারা জানান, আগামী শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৬-১১ মাস বয়সী ৫৮ হাজার নয়শ’ ২২ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী চার লাখ ৩২ হাজার ৭৮ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
এজন্য সুপারভাইজার, স্বেচ্ছাসেবী ও টিকাদান কেন্দ্র নির্ধারণ করাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
‘জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৫’ উপলক্ষ্যে রংপুর সিটি কর্পোরেশন ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় আয়োজিত পৃথক দুটি সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, এবার সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ছয় মাস থেকে ১১ মাস পর্যন্ত ১৯ হাজার পাঁচশো শিশুকে নীল রঙের এবং ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী এক লাখ ১৪ হাজার শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এজন্য সিটির ৩৩টি ওয়ার্ডে দুশ’ ৯৭টি কেন্দ্রে সুপারভাইজার, মনিটরিং ও সুপারভিশনসহ ছয়শ’ ৬৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী ‘ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজে নিয়োজিত থাকবেন।
যদি কোনো শিশুকে গত চার মাসের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়ে থাকে, তবে সেই শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই।
তিনি আরও বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলে সাধারণত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এরপরও যদি শিশুর বমি বমি ভাব হয়, তাহলে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
উম্মে ফাতিমা বলেন, শিশুকে ভরা পেটে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। কান্নারত অবস্থায় বা জোর করে কোনো শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। আস্ত বা গোটা ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। ক্যাপসুলের মুখ কাঁচি দিয়ে কেটে ক্যাপসুলের ভেতরের তরল ভিটামিন ‘এ’ শিশুকে খাওয়াতে হবে। তবে আগে থেকে ক্যাপসুলে মুখ কেটে রাখা যাবে না।
অন্যদিকে, জেলা সিভিল সার্জন ডা. শাহিনা সুলতানা বলেন, আট উপজেলার ছয় মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ৩৯ হাজার চারশ’ ২২ জন শিশুকে নীল রঙের এবং ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৮ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
এজন্য এক হাজার আটশ’ ৩২টি কেন্দ্রে তিন হাজার ছয়শ’ ৬৪ জন স্বেচ্ছাসেবী, চারশ’ ৫৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও দুশ’ ২৮ জন তদারককারী ক্যাম্পেইন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন।
তিনি আরো বলেন, প্রতিটি টিকা কেন্দ্র, বড় হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট ও রেলওয়ে স্টেশনের অস্থায়ী/ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ালে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি কমবে উল্লেখ করে শাহিনা সুলতানা বলেন, ক্যাম্পেইনের দিন শনিবার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মায়েদেরকে শিশুর জন্মের পর পর শাল দুধ খাওয়ানো, শিশুর ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ বাচ্চাকে খাওয়ানো, ছয় মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি পুষ্টিকর ও সুষম বাড়তি খাবার শিশুকে খাওয়ানোসহ পুষ্টি সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ অন্ধত্ব প্রতিরোধ করাসহ শিশু মৃত্যু রোধ করে।