রাজশাহীতে ন্যায্য দামে পশু কেনাবেচায় খুশি ক্রেতা-বিক্রেতারা

বাসস
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১৬:২৫ আপডেট: : ০৩ জুন ২০২৫, ১৭:৩৯
ছবি: বাসস

রাজশাহী, ৩ জুন, ২০২৫ (বাসস): আর মাত্র তিনদিন পরেই উদযাপিত হবে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। রাজশাহী মহানগর ও আশপাশের উপজেলার পশুর হাটগুলো ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় ইতোমধ্যেই জমে উঠেছে।

এ বছর ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সেই সাথে হাটে অসুস্থ গরু-ছাগলের তাৎক্ষণিক চিকিৎসায় ভেটেনারি ক্লিনিকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবমিলিয়ে এবারের কোরবানি উপলক্ষে হাটে হাটে ব্যতিক্রমি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। 

উত্তরবঙ্গে কোরবানি গরুর সবচেয়ে বড় হাট হলো রাজশাহী সিটি হাট ও কাটাখালি হাট। সরেজমিনে হাটের পরিস্থিতি যাচাইকালে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, গতবারের তুলনায় এ বছর দাম কম হলেও লোকসান হয়নি বিক্রেতাদের। ন্যায্য দামে পশু বিক্রি করছেন তারা। অপরদিকে তুলনামূলক কম দামে পছন্দের পশু পেয়ে ক্রেতারাও খুশি । 

রাজশাহীর সিটি হাটের গরু বিক্রেতা রাহিমুল জানান, তিনি প্রতি বছর কোরবানির ৫-৬ মাস আগে গরু কিনে লালন পালন করে বিক্রি উপযোগি করে তোলেন। এবারও ৬ টি গরু পালন করেছেন। পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় এবার লালন পালন খরচ একটু বেশি হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৩টি গরু বিক্রি করে খুব বেশি লাভ না পেলেও লোকসান হয়নি। বাকি ৩টি গরু বিক্রি করে আশানুরূপ লাভ করতে পারবেন বলে মনে করছেন। 

আরেক গরু বিক্রেতা সুরমান বলেন, ‘চারটি গরু হাটে এনেছি। একটি বিক্রি করেছি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। আশা করেছিলাম ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবো। লাভ কম হলেও খুশি। কারণ এবার হাটে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি গরু আমদানি হয়েছে। এরমধ্যে যা দাম পেয়েছি তা খারাপ না।’

আরেক বিক্রেতা আব্দুল্লাহ জানান, হাটে ভারতীয় গরু আসলে দেশি গরু ব্যবসায়ী বা খামারিরা বিপাকে পড়তো। 

সিটি হাটে গরু ক্রেতা সহিমুদ্দিন বলেন, ‘১ লাখ ৩৩ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। বাজেটের মধ্যে ভালো গরু পেয়েছি বলে মনে হচ্ছে।’

আরেক ক্রেতা সোহরাব জানান, গতবারের তুলনায় এবার ন্যায্য দামে ভালো গরু কেনা যাচ্ছে।

হাট ইজারাদার খাইরুল ইসলাম বলেন, হাটে প্রচুর গরু আমদানি হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় খুশি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। 

এদিকে, রাজশাহী মহানগরীর অদূরে কাটাখালি গরু হাটেও ব্যাপক গরু আমদানি হচ্ছে। রয়েছে প্রচুর ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম।

এই হাটের গরু বিক্রেতা সবুর বলেন, ‘হাটে প্রচুর গরু আসছে। বেচাকেনা ভালো, দামও ভালো।’

হাটে গরু দেখতে আসা জব্বার বলেন, ‘বেপারীদের লাভ হয়তো কম হচ্ছে কিন্ত কেউ লোকসানে বিক্রি করছে না।’

তিনি আরো বলেন, এবার দামে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই খুশি।

শুধু রাজশাহী মহানগরীর এই হাটগুলো নয়, শেষ সময়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে উপজেলার বিভিন্ন গরুর হাটগুলো। 

রাজশাহী জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আতোয়ার রহমান বাসস’কে বলেন, ‘এবারের পশুর দাম গত বছরের মতোই। বিক্রেতারাও দামে খুশি। ভারতীয় গরু না আসায় দেশি বিক্রেতারা লাভের মুখ দেখছেন।’

ভেটেনারি ক্লিনিকের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। সরকারের এ উদ্যোগে সবাই খুশি।’

প্রসঙ্গত, এ বছর রাজশাহী জেলায় কোরবানির জন্য ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৩টি পশু প্রস্তুত করা হয়। যা জেলার চাহিদার তুলনায় বেশি। অতিরিক্ত পশুগুলো রাজশাহীর বাইরে যাচ্ছে। এ বছর দেশি গরুতেই চাহিদা মিটেছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জাফলংয়ে ডুবে নিখোঁজ পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
নওগাঁয় কষ্টি পাথরের মূর্তিসহ দু’জন গ্রেপ্তার
তেল ও গ্যাসে আরও বিনিয়োগের প্রয়োজন হতে পারে: আইইএ
কিশোরগঞ্জে ব্ল্যাক কুইন তরমুজ চাষে তরুণ কৃষকের সাফল্য
ধর্ম মত নির্বিশেষে সবাই আমরা এক পরিবারের সদস্য: প্রধান উপদেষ্টা
কিশোরগঞ্জে ব্ল্যাক কুইন তরমুজ চাষে তরুণ কৃষকের সাফল্য
ইসরাইলি হামলার পর মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাতারকে পাশে থাকার আহ্বান রুবিওর
ফরিদপুর-৪ আসনকে ভাগ করে দু’টি আসন করার দাবিতে হাইকোর্টে রিট
রংপুরে আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
ভেনিজুয়েলার ‘মাদকবাহী’ নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় নিহত ৩
১০