বাংলার মাটিতে ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখে মরতে চাই: শহীদ আবু সাঈদের বাবা

বাসস
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৩৪
শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। ছবি: বাসস

রংপুর, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শহীদ আবু সাঈদ পরিবারের সদস্যরা। তবে রায় কার্যকরের বিষয়ে তাদের গভীর শঙ্কা রয়েছে।

রায় ঘোষণার পর আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘শেখ হাসিনার নির্দেশে আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আজ তার ফাঁসির রায় হয়েছে-এটা আমাকে খুশি করেছে। কিন্তু বাংলার মাটিতে এই ফাঁসি কার্যকর দেখেই মরে যেতে চাই। আল্লাহ যেন সেই দিন আমাকে দেখার তৌফিক দেন।’

রায় কার্যকরের বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের ক্ষেত্রে যেন এমনটি না ঘটে।

রায় ঘোষণার পর পরিবারের পক্ষ থেকে পলাতক শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য আসামিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার দাবি জানানো হয়। তাদের বক্তব্য-কোন আইনের ফাঁকফোকরে যেন এসব অপরাধীরা বাঁচতে না পারে।

আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘শুধু শেখ হাসিনার বিচার হলে হবে না-যারা হুকুম দিয়েছে, যারা গুলি করেছে-সবার ফাঁসি চাই। আমি একজন মা, আজ বুঝতে পারছি সন্তান হারানোর কষ্ট।’

বড়ভাই আবু হোসেন বলেন, ‘রায় ঘোষণা করলেই হবে না, কার্যকর করতে হবে। দীর্ঘদিন স্বৈরাচারী শাসন চালিয়ে গুম-খুনের রাজনীতি করেছে তারা। জুলাই আন্দোলনের সময় যে গণহত্যা হয়েছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে চলে গেছে। শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে শুধুই বিচার কার্যকর হলে।’

হত্যা মামলার বাদী ও  শহীদ আবু সাঈদের আরেক বড় ভাই রমজান আলী বলেন, ‘এ দেশে অনেক রায়ই কার্যকর হয় না। আমরা চাই না এই মামলায়ও এমনটি ঘটুক। শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিপরিষদের সকল সদস্যের বিচার বাংলার মাটিতেই দেখতে চাই।’

পরিবারের সদস্যরা জানান, আবু সাঈদকে প্রকাশ্যে গুলি করার দৃশ্য দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাদের অভিযোগ-তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশে পুলিশ প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে সাঈদকে হত্যা করেছে।

২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বেরোবি) সংলগ্ন পার্ক মোড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে বেরোবি ইংরেজি বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদ শহীদ হন। পরদিন ১৭ জুলাই তাকে পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

সাঈদ হত্যার ভিডিও ভাইরাল হলে দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন দেখা দেয়। একপর্যায়ে ৫ আগস্ট পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএনসিসির উচ্ছেদ অভিযান
এক মাসের মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেওয়া রায় কার্যকরের দাবি নাহিদের
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে স্বাগত জানালেন শহীদ ওয়াসিমের বাবা ও শান্তর মা
হাসিনার বিরুদ্ধে রায় প্রমাণ করে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়: প্রধান উপদেষ্টা
মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশের মেডিকেল শিক্ষায় বিশেষ কোটা
খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে দেয়া রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত বিজয় হবে না: গণঅধিকার পরিষদ
প্রভোস্ট আ্যাওয়ার্ড পেলেন ঢাবি অমর একুশে হলের ১৩ শিক্ষার্থী
লিওনাইস ৩য় গ্র্যান্ড মাস্টার্স দাবা প্রতিযোগিতার তৃতীয় রাউন্ড অনুষ্ঠিত
ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে এ রায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ : গণসংহতি আন্দোলন
জাঞ্জিবারকে উড়িয়ে দিয়েছে নেপাল
১০