যশোরে দুদকের ১৮৭তম গণশুনানি অনুষ্ঠিত

বাসস
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:২৭

ঢাকা, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত দপ্তরসমূহে সেবার মান উন্নয়ন, সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি রোধ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে আজ যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ১৮৭তম গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গণশুনানিতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “আজকের উপস্থিতদের মধ্যে দুটি পক্ষ- সেবাদাতা ও সেবাগ্রহীতা। সেবাদাতারা সরকারি অর্থে পরিচালিত, আর সেবাগ্রহীতারা কষ্টার্জিত অর্থের একটি অংশ কর হিসেবে প্রদান করেন, যার মাধ্যমে আমাদের বেতন হয়। দুর্নীতি নির্মূলের প্রত্যাশা এখনই করা অতিরিক্ত হবে, তবে চাইলে দুর্নীতি কমানো সম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, “গণশুনানির মাধ্যমে আমরা জনগণকে কর্মকর্তাদের মুখোমুখী নয়, বরং সম্পৃক্ত করছি। এতে পারস্পরিক যোগাযোগ ও জবাবদিহিতা বাড়ে। যশোর ছাড়ার সময় যদি দেখি মানুষের চোখে অশ্রুবিন্দু, তবে বুঝব আমি জনগণের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলাম। আর যদি হাততালি পড়ে, বুঝব জনগণ আমাকে চায়নি।”

সেবাদাতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শুধু এসিআর পূরণ করলেই দায়িত্ব শেষ হয় না, বিবেকের কাছেও জবাবদিহি করতে হয়।”

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “প্রেসম্যানরা হচ্ছেন হুইসেল ব্লোয়ার। দুদকের মামলাগুলোর অর্ধেকের বেশি তথ্য এসেছে তাদের প্রতিবেদন থেকে। সংবাদ যথার্থ কিনা, তা তদন্তেই প্রমাণিত হয়।”

বিশেষ অতিথি মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, “জঙ্গলের আইন সভ্যতার আইন হতে পারে না। কিছু মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন- এটাই আজকের আলোচনার বিষয়। যেন ভবিষ্যতে কেউ বঞ্চিত না হন, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।”

তিনি আরও বলেন, “সমাজে দেখা যাচ্ছে, প্রাপ্য থেকে কাউকে বঞ্চিত করাই যেন বাহাদুরি। এমন সংস্কৃতি চলতে দেওয়া যায় না। আমরা যেন নিজেরা দুর্নীতি না করি এবং অন্যের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দিই।”

মূল্যবান উপহার গ্রহণ না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ‘নো গিফট’ সংস্কৃতির দিকে এগোচ্ছি। অতিথিকে আপ্যায়ন করলেও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে উপহার গ্রহণে সতর্ক থাকতে হবে।”

গণশুনানিতে যশোর জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা পেতে হয়রানির শিকার বা সেবা বঞ্চিত নাগরিকরা তাদের অভিযোগ সরাসরি কমিশনের সামনে তুলে ধরেন। মোট ১০৪টি অভিযোগের মধ্যে দুদকের তফসিলভুক্ত ৭৫টি অভিযোগের শুনানি হয়। এর মধ্যে ১০টি অভিযোগ অনুসন্ধানে নেওয়া হয়েছে এবং বাকিগুলো প্রতিবেদন দাখিলের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা হবে।

গণশুনানির মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকারি সেবার মান নিশ্চিতকরণ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সততা, নিষ্ঠা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করে দুর্নীতি প্রতিরোধ।

এর আগে যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় সপ্তাহব্যাপী মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ, অভিযোগ সংগ্রহ বুথ স্থাপন, অভিযোগ বাক্স স্থাপনসহ গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। গণশুনানিতে সেবা দাতা কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক, স্কাউট ও বিএনসিসি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
অর্থনৈতিক উন্নয়নের গ্রহণযোগ্য সমাধান ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট: মান্না
জনসংখ্যা গবেষণা ও পরিকল্পনা প্রণয়নে ঢাবি-ইউএনএফপিএ চুক্তি স্বাক্ষরিত
পরিবহন সেক্টর দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রেখেছে: এ্যাড. শিমুল বিশ্বাস
শাহজালালে অগ্নিকাণ্ড তদন্তে সহায়তায় ঢাকায় তুরস্কের বিশেষজ্ঞ দল
ডলফিন বাঁচলে নদী বাঁচবে, নদী বাঁচলে মানুষও বাঁচবে : পরিবেশ উপদেষ্টা  
গাজাবাসীর জন্য পুনাকের খাদ্য সহায়তা
নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভায় যুক্ত হলেন দুই তরুণ ব্যক্তিত্ব
জুলাই শহিদ পরিবারের সাথে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত
নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি হয়নি: ইসি সচিব 
পুরনো ঘটনায় নতুন গুজব ছড়ানো হচ্ছে : বাংলাফ্যাক্ট
১০