
ঢাকা, ৬ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ‘বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের চোখে চীন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে প্রথমা। সম্পাদনা করেছেন বুলবুল সিদ্দিকী ও মা শিয়াও ইয়ান।
বইটিতে ২২ জন বাংলাদেশি লেখক চীন বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ ও অনুভব তুলে ধরেছেন। এতে চীনের অর্থনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি, মানুষের জীবনযাত্রা ও উন্নয়নগাঁথা স্থান পেয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল হান্নান চৌধুরী, চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর লি শাওপেং, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাহাবুল হক এবং সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফারহানা ফেরদৌসী।

অনুষ্ঠানে বাসস’র প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক যতটা নিবিড়, চীন সম্পর্কে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত বই সে পরিমাণে নেই। অন্যদের পাশাপাশি পেশাদার লেখকদের চীনে আমন্ত্রণ জানালে তারা বই লিখে পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও গভীর ও অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারবেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল হান্নান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বন্ধুত্ব হাজার বছরের পুরোনো। চীনা জনগণ পরিশ্রমী, বন্ধুবৎসল ও সম্মানবোধে সমৃদ্ধ একটি জাতি। মাত্র তিন দশকে তারা যে উন্নয়ন করেছে, তা থেকে আমাদের শেখার মতো অনেক কিছুই রয়েছে।
তিনি বলেন, ইতিহাসের গভীরে প্রোথিত বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের শিকড় প্রাচীনকাল থেকেই দৃঢ়। কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে রাজনৈতিক সফর, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, উচ্চশিক্ষা, পর্যটন ও চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমাগত দৃঢ় হয়েছে।

শিগগিরই বাংলায় প্রকাশিত বইটি চীনা সংস্করণ প্রকাশিত হবে উল্লেখ করে বইটির সম্পাদক ও কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশি পরিচালক অধ্যাপক বুলবুল সিদ্দিকী বলেন, চীনের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতার সফল প্রয়োগের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে।
এই ধরনের কাজে চীন সহযোগিতা করবে উল্লেখ করে চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর লি শাওপেং বলেন, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জনগণের পারস্পরিক বোঝাপড়া দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও গভীর ও জীবন্ত করে তুলেছে। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের গবেষণা, চিন্তাভাবনা ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করছে।
কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের চীনা পরিচালক মা শিয়াও ইয়ান বলেন, ‘আমরা চাই আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চীনা ভাষা শিখুক, চীনা সংস্কৃতি জানুক, চীন সফর করুক এবং ডিজিটাল ও সবুজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করুক। তরুণরাই পারবে আমাদের যৌথ ভবিষ্যৎকে আলোকিত করতে।’
অনুষ্ঠানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চীনের জনপ্রিয় একটি গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষার শিক্ষক মো. শরিফুল হাসান।