লালমনিরহাট, ৬ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি গত ৮ বছরের মধ্য সর্বোচ্চ বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে।
তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে গতরাতে বিপৎসীমার ৩৫ সে : মি. ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এর ফলে তিস্তার পানির চাপ কমাতে ব্যারেজ এলাকার ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও তিস্তা ব্যারেজের বামতীরে অবস্থিত ফ্লাটবাইবাস সড়কের ওপর দিয়েও সারারাত পানি প্রবাহিত হয়েছে। এর ফলে জেলার ৫ উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৬ টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দীর্ঘ সময় তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে লালমনিরহাটের নিম্ন অঞ্চলগুলোতে পানি প্রবেশ করায় হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুরনা, ডাউয়াবাড়ি, পাটিকাপাড়া, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ইউনিয়নের বহু গ্রামের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি।
পানিতে ডুবে আছে গ্রামীণ কাচা, পাকা রাস্তা, সবজি ক্ষেত, রোপা আমন ক্ষেত, পাট ক্ষেত। ভেসে গেছে অনেকের পুকুরের মাছ। প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। অনেকে গরু, ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উঁচু স্থানে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাঁধ ভেঙে পানি যাতে লোকালয়ে প্রবেশ না করে সে জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের গঠিত টিম সর্বাত্মক পর্যবেক্ষণ করছেন। পানি কমে যাওয়ার পরেও ভাঙন দেখা দিলে পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ রয়েছে বলে তিনি জানান।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকি হায়দার বলেন, বন্যার্ত এলাকার খোঁজখবর ও তালিকা করার জন্য পাঁচ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্যার পানি স্থায়ী হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আক্রান্ত এলাকায় সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।