সিলেট, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পৌষ্যকোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সবধরণের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল ও আবেদন ফি কমানোর দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্ত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর কোর্সের ক্রেডিট ফি ও সেমিস্টার ফি কমানোর দাবি তুলেন ধরেন তারা।
সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পৌষ্য কোটা রাখে মানে জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটকে অস্বীকার করা। একইসঙ্গে শিক্ষার্থী ভর্তিতে যে মুক্তিযুদ্ধ কোটা রয়েছে, সেটাও বাতিলে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। প্রকৃতপক্ষে এ সময়ে মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় প্রকৃত কোনো মুক্তিযুদ্ধের তালিকা খুবই নগণ্য। তাই এসব কোটা রাখা মানে মেধাবী শিক্ষার্থী ও মুক্তিকামী জনতার সঙ্গে হাস্যরস করা।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ২৪ জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পৌষ্য কোটা, মুক্তিযুদ্ধ কোটাসহ কোনধরনের বৈষম্যমূলক কোটা রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তারা সন্তানেরা শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে। তারপরেও যদি শিক্ষকদের সন্তানদের কোটা সুবিধা প্রদান করা হয়, তাহলে সেখানে শিক্ষকদের মেধাকে প্রশ্নবিদ্ধ ও তাচ্ছিল্য করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশিরভাগ গ্রামের মধ্যবিত্ত ও নিম্নশ্রেণির পরিবারের সন্তানেরা পড়াশোনা করে। সেক্ষেত্রে এ ধরনের অযৌক্তিক কোটা রাখা ও ভর্তির আবেদন ফি অতিরিক্ত রাখা মানেই তাদেরকে অধিকার বঞ্চিত করা।
পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন ফি ১২০০ টাকা। এ ফি রাখা হলে অনেক নিম্নবিত্ত শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আবেদনই করতে পারবে না। আমরা চাই এই ফি যৌক্তিক একটা পর্যায়ে নিয়ে আসা হোক। অন্যদিকে সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০০ টাকার মতো বৃদ্ধি করেছে। এ ফিও যেন দ্রুত কমিয়ে আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগরে শিক্ষার্থী মেহরাব সাদাত, কেমি কৌশল ও পলিমার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কিরণ হাওলাদার, রাজনৈতিক অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জুনায়েদসহ অনেকে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সাজেদুল করিম গণমাধ্যমে বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে তাদের দাবি দাওয়াগুলো লিখিত আকারে প্রদান করুক। তাহলে আমরা এসব দাবি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে সুপারিশ করব। কাউন্সিলে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বিবেচনা করে দেখবে।