ঢাকা, ১১ মে, ২০২৫ (বাসস) : আজ বিশ্ব মা দিবস। বিশ্বের প্রতিটি মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা আর ভালবাসা প্রকাশের বিশেষ দিন আজ। যুক্তরাষ্ট্রে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটির সূচনা হলেও বর্তমানে বাংলাদেশসহ প্রায় সারা বিশ্বেই তা নানা আয়োজনে পালিত হয়।
প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস পালন করা হয়। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা।
এ পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ও মধুর শব্দের নাম ‘মা’। কবির ভাষায়-‘মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু যেন ভাই, ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই।’
মাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আলাদা করে কোন দিন বা দিবসের আসলে প্রয়োজন নেই। তবুও সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার সন্তানরা তাদের মায়েদের গভীর শ্রদ্ধায় স¥রণ করছেন। কেননা সন্তান ও মায়ের মধ্যে যে সম্পর্ক, এত দৃঢ় আর কোনও সম্পর্ক এই পৃথিবীতে নেই।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পালন করছে।
বিশ্ব মা দিবসের ইতিহাস অনেক বছরের পুরোনো। মধ্যযুগে একটি প্রথা চালু ছিল, যারা যেখানে জন্মগ্রহণ করেছেন, কিন্তু কাজের জন্য সেখানে থেকে বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছেন, তারা আবার তাদের বাড়িতে, মায়ের কাছে ও ছোটবেলার চার্চে ফেরত আসবেন। সেটা হবে খ্রিষ্টান ধর্মের উৎসব লেন্টের চতুর্থ রোববারে।
ওই সময় ১০ বছর বয়স হতেই কাজের জন্য বাড়ির বাইরে চলে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ছিল। তাই, এটা ছিল সবাই মিলে পরিবারের সঙ্গে আবারও দেখা করার ও একসঙ্গে সময় কাটানোর একটা সুযোগ । এভাবে ব্রিটেনে এটা মায়ের রোববার হয়ে উঠে। কিন্তু, পরে লেন্টের তারিখ পরিবর্তিত হওয়ায় রোববারও আর নির্দিষ্ট থাকে না।
আধুনিক যুগে মা দিবসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে প্রতি বছরের মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস পালিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আনা জারভিস নামে এক নারী মায়েদের অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য
সচেতন করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। ১৯০৫ সালে আনা জারভিস মারা গেলে, তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সচেষ্ট হন। ওই বছরই তিনি তার সান ডে স্কুলে প্রথম এ দিনটিকে মা দিবস হিসেবে পালন করেন।
১৯০৭ সালের এক রোববার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা।
এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়।
১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন এ দিনটাকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকে প্রতি বছরের মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বেশিরভাগ জায়গায় মা দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।
মা দিবসে সন্তানরা মাকে উপহার দেওয়ার পাশাপাশি তার সঙ্গে সময় কাটিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফিড ভরে যায় মা ও সন্তানের ভালবাসাময় ছবি ও স্মৃতিচারণে। বিভিন্ন ফ্যাশন ও গিফট হাউসগুলো দিবসটি উপলক্ষ্যে নানা ধরনের উপহারের পসরা সাজিয়ে থাকে। এ ছাড়াও রেস্টুরেন্টগুলোতে থাকছে মা দিবস উপলক্ষ্যে নানা ধরনের অফার।
মা দিবসের মূল বার্তা হলো- মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, ত্যাগ ও স্নেহের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।