কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণা

বাসস
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:৫৩

ঢাকা, ৬ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, তার দল নতুন নেতা নির্বাচন করার পর তিনি দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।

লিবারেল পার্টির নেতা ট্রুডো ৯ বছর ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেছেন, নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর তিনি পদত্যাগের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর সফলতার পেছনে পরিবারের ভূমিকা রয়েছে। গত রাতে নৈশভোজের সময় সন্তানদের কাছে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

সোমবার অটোয়ায় নিজ বাসভবনের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।

কানাডার রাজধানী অটোয়ায় এ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রুডো বলেন, কয়েক মাস ধরে বাধার কারণে পার্লামেন্ট পুরোপুরি অচল হয়ে আছে। একই সঙ্গে কয়েক মাস ধরে উৎপাদনশীলতার ঘাটতি রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এখন নতুন করে শুরু করার সময়। কানাডার রাজনীতিতে উত্তাপ কমিয়ে আনার জন্য তা দরকার।

তিনি বলেন, 'প্রতি সকালে যখন আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জেগেছি, কানাডিয়ানদের ভিন্ন মত মেনে নেওয়ার সক্ষমতা, উদারতা ও সংকল্প আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।'

ট্রুডো আরও বলেন, 'আমি এই দেশের জন্য, আপনার জন্য লড়াই করেছি।'

তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে চলাা ট্রুডো বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই ‘জটিল’ সময়ে দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য পার্লামেন্টে একটি নতুন শুরু দরকার।

আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত পার্লামেন্ট অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেছেন তিনি।

ট্রুডো ২০১৫ সালে লিবারেল পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে প্রথমবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ন। এরপর প্রায় এক দশক ধরে দেশটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি। সর্বশেষ ২০২১ সালে ট্রুডোর নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে লিবারেল পার্টি।

আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে কানাডায় নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে দলীয় নেতৃত্ব ও প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হলেন ট্রুডো।

পদত্যাগের জন্য বিরোধীদের পাশাপাশি নিজ দলের মধ্য থেকেও ট্রুডোর ওপর চাপ বাড়ছিল। এখন ট্রুডোর উত্তরসূরি কে হতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সেই তালিকায় ট্রুডোর সরকারের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মার্ক কারনির নাম আলোচনায় রয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা অনেক কমে আসে। তার সরকার কয়েক দফা অনাস্থা ভোট কোনো মতে এড়াতে সক্ষম হলেও সমালোচকরা তাকে একাধিকবার পদ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

২০২৫ সালের অক্টোবরের নির্বাচন পর্যন্ত দলের নেতৃত্বে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ট্রুডো।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত চাপের মুখে পড়েছেন তিনি, যা তাকে আরও বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।

ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতা গ্রহণ করেই কানাডার পণ্য আমদানির বিরুদ্ধে বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।

ট্রাম্পের এই হুমকির বিরুদ্ধে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে, সে বিষয়ে মতভেদের জেরে ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন উপ প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। বিশ্লেষকদের মতে, এটাই ট্রুডোর মন্ত্রিসভায় প্রথম 'প্রকাশ্য' বিদ্রোহের ঘটনা। এর পর থেকে পদত্যাগের জন্য ট্রুডোর ওপর চাপ বাড়তে থাকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
গুরুতর আহতদের দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি : মানসুরা আলম
বিমান দুর্ঘটনায় বেগম খালেদা জিয়ার শোক : নেতাকর্মীদের হতাহতদের পরিবারের পাশে থাকার আহ্বান
আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি : প্রধান উপদেষ্টা
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান তথ্য উপদেষ্টার
ঢাকায় বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় চীনের শোক
বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্য উপদেষ্টার
২০২৬ সালের হজের প্রাথমিক নিবন্ধন শুরু ২৭ জুলাই
উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় জাপানের শোক
বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের পরিবহনের সুবিধার্থে মেট্রোরেলে বিশেষ ব্যবস্থা
সরকারি অর্থ অপচয় ও সেবায় অনিয়মের অভিযোগে দুটি ট্রেনে দুদকের অভিযান
১০