শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করতে বাবনপুরে জনতার ঢল

বাসস
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৮:৩৪
ছবি: বাসস

রংপুর, ১৬ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করতে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে ছাত্র-জনতার ঢল নেমেছে। প্রথম শাহাদাতবার্ষিকীতে তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

বুধবার ভোরের আলো ফোটার পরই বাবনপুর গ্রামে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। গ্রামজুড়ে শ্রদ্ধা ও সম্মানের আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। সকাল আটটার দিকে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ এর কর্মসূচি শুরু হয়।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। তাঁর এই আত্মত্যাগের পর এক রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার পতন ঘটে।  

প্রথম শাহাদাতবার্ষিকীতে জাতি গভীর শ্রদ্ধায় আবু সাঈদকে স্মরণ করছে। এই তরুণ বীর বর্তমান প্রজন্মের জন্য হয়ে উঠেছেন এক অফুরন্তত্ম প্রেরণা ও সাহসের প্রতীক।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ আবু সাঈদের স্মরণে বাবনপুর গ্রামজুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ব্যানার টানানো হয়েছে। শহীদ আবু সাঈদের কবরটি লোহার গ্রিল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। 

প্রথম শাহাদাতবার্ষিকীতে বেরোবি উপাচার্য, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বাবনপুরে এসে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় তারা আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিবারের খোঁজখবর নেন।

অনেকেই শহীদ সাঈদের বাবা মো. মোকবুল হোসেন, মা মনোয়ারা বেগম, দুই ভাই আবু হোসেন ও রমজান আলী এবং ছোট বোন সুমি খাতুনের সঙ্গে ছবি তোলেন।

কবরের পাশেই শহীদ আবু সাঈদ ফাউন্ডেশন-এর উদ্যোগে তাদের চলমান ও প্রস্তাবিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

সকাল সাড়ে ৭টায় শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা।

পরে বেরোবি উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, আজ শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে আমরা তার কবর জিয়ারত করেছি এবং পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। আবু সাঈদের যে অবদান, তা গোটা বিশ্ব দেখেছে। সে ছিল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্তান। তার এই আত্মত্যাগ আমাদেরকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গৌরবান্বিত করেছে।

বেরোবি উপাচার্য জানান, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে আবু সাঈদের সাহস ও মেধার কথা জানতে পারে, সেজন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, আমরা তাকে মনে রাখতে চাই। শহীদ সাঈদকে স্মরণে দিনব্যাপী কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, আবু সাঈদ ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক সাহসী যোদ্ধা। এই জাতি তাকে চিরকাল স্মরণ করবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, আমরা তাদের ভুলব না। শহীদ পরিবারের পাশে থাকব। আবু সাঈদের স্বপ্ন পূরণের যাত্রা শুরু হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
গাজাগামী ত্রাণবাহী জাহাজের নিরাপত্তা বিধানের আহ্বান জামায়াতের
ঝিনাইদহে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলতে পারছেন না থুরাম
পটুয়াখালীতে ঐতিহ্যবাহী শারদীয় নৌকা বাইচ 
রাজধানীর নাখালপাড়ায় সাড়ে ৫ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ২
ইসরাইলি অবরোধ উপেক্ষা করে গাজা অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে ফ্লোটিলা
মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে বিএনপি নেতৃবৃন্দ
আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলায় নিহত যুবদল নেতা রাহুল সরকারের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
কুমিল্লা মহানগর বিএনপি নেতা ভিপি জসিমের ইন্তেকাল
নওগাঁয় ট্রাক্টরের চাপায় ইউপি চেয়ারম্যান নিহত
১০