ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): অবৈধ গ্যাস ও জ্বালানি তেল সংযোগ এবং বিক্রয় কার্যক্রমের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান চলছে।
সোমবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা পৃথক মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তিন জেলায় এসব অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। সঙ্গে বিপুল পরিমাণ জরিমানা আদায় এবং অবৈধভাবে ব্যবহৃত গ্যাস সরঞ্জাম ও পাইপও অপসারণ করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিজা খাতুন, মিল্টন রায় ও সৈকত রায়হানের নেতৃত্বে অভিযানগুলো পরিচালিত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কালিকাপুর ও রাধানগর এলাকায় মোট ৭০টি অবৈধ আবাসিক গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ‘মিস্টার কিচেন’ এবং ‘পিজ্জা বয়’ নামে দুটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেরও অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের দায়ে আট আবাসিক গ্রাহককে মোট ৪০ হাজার টাকা এবং দুটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানকালে প্রায় ৬০০ ফুট এমএস পাইপসহ বিভিন্ন ধরনের বার্নার ও ওভেন জব্দ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী এলাকায় পরিচালিত অভিযানে সাতটি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
এর মধ্যে চারটি চুনা কারখানা এবং তিনটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান (হোটেল, চায়ের দোকান) ছিল। অভিযানে বিভিন্ন আকারের প্রায় ৮৭০ ফুট পাইপ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের দায়ে অভিযুক্তদের মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একইভাবে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন চড়াইল ও বোরহানিবাগ/মুসলিমবাগ এলাকায় একটি ওয়াশিং কারখানা, একটি তারের কারখানা এবং একটি চারতলা আবাসিক ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
কারখানাগুলোয় বয়লার, ড্রায়ার, তাপাই ভাট্টিসহ উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন স্থাপনা ছিল, যার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ গ্যাস অপচয় হত।
এই অভিযানে ২৯০ ফুট পাইপ, দুটি বল ভালভ এবং একটি কম্প্রেসর সেট জব্দ করা হয়। এসব অবৈধ সংযোগ থেকে প্রতি মাসে আনুমানিক ৬ লাখ ৮০ হাজার ১৪৮ টাকা মূল্যের ২৩ হাজার ২৪৫ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিমন সরকার নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় অনুমোদনহীন এবং ভেজাল জ্বালানি তেল বিক্রির বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। অভিযানে একটি অবৈধ প্রতিষ্ঠান থেকে ৫৭০ লিটার ডিজেল এবং ২৭৫ লিটার পেট্রোল জব্দ করা হয়।
এই অভিযানগুলো অবৈধ জ্বালানি ব্যবহার এবং বিপণন বন্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানেরই প্রতিফলন। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে সরকার জ্বালানি খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর।