নাগেশ্বরীতে গঙ্গাধর নদীর ভয়াবহ ভাঙন, ক্ষতিগ্রস্তদের মানববন্ধন

বাসস
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:১৯
ছবি : বাসস

কুড়িগ্রাম, ২৪ অক্টোবর ২০২৫(বাসস):অসময়ে নদনদীর পানি বৃদ্ধি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়নের ধনিরামপুর ও মধ্য ধনিরামপুর এলাকায় গঙ্গাধর নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে শতাধিক বসতভিটা ও বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

কচাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন মণ্ডল জানান, গত সাতদিনে অন্তত ৩০টি বসতভিটা গঙ্গাধর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিদিন ভাঙনকবলিত পরিবারগুলো আশ্রয়ের খোঁজে তার বাড়িতে ভিড় করছে। কোথায় তাদের রাখা যাবে—এ নিয়ে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নাগেশ্বরী উপজেলার গঙ্গাধর নদী তীরবর্তী মধ্য ধনিরামপুর গ্রামে ভাঙনের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। জয়বর, ছালাম, বেলাল, কালাম ও আলামিনসহ একাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অনেকে ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ চার-পাঁচবার স্থান পরিবর্তনের পরও নিরাপদ জায়গা পাননি।

নদীভাঙন রোধ ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মধ্য ধনিরামপুর এলাকায় গঙ্গাধর নদীর তীরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ এতে অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা জানান, ধনিরামপুর, মধ্য ধনিরামপুরসহ তিনটি ওয়ার্ডের দুই কিলোমিটার এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন চলছে। শতাধিক ঘরবাড়ি ও হাজার হাজার বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। হুমকির মুখে আছে পল্লী বিদ্যুতের সাবমেরিন ক্যাবল পয়েন্ট, বসতভিটা এবং সদ্য নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধও।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন কচাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন মণ্ডল, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ আল-আমীন, সাবেক চেয়ারম্যান হাসেম আলী সরকার, ও চর উন্নয়ন কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ। বক্তারা দ্রুত ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

জেলার চর উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু বলেন, ‘কুড়িগ্রামের ১৬টি নদনদীর অধিকাংশের উৎস ভারতে হওয়ায় তাদের পানির প্রবাহ উজানের ওপর নির্ভর করে। উজান থেকে আসা অতিরিক্ত পানি ও পলির কারণে নদীর তলদেশ উঁচু হচ্ছে, ফলে তীর ভেঙে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, “গত ১০ বছরে এক লাখেরও বেশি মানুষ নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন। সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও ডুবো চর অপসারণ না করায় ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয়নি। নদীভাঙন ও চরের উন্নয়ন নিয়ে আলাদা ‘চর বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন করলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে।”

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, বর্তমানে জেলার ৩৩টি স্থানে ভাঙন চলছে। আকস্মিক পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙনের পরিধি বেড়েছে। ইতিমধ্যে আড়াইশো কেজি বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে জরুরি ভাঙনরোধ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নওগাঁয় রবিশস্য চাষাবাদে প্রণোদনা পাচ্ছেন ৭০ হাজার প্রান্তিক কৃষক
লন্ডন সম্মেলনে ইউক্রেনকে আরো ক্ষেপণাস্ত্রের দেয়ার আহ্বান জানাবে যুক্তরাজ্য
রাশিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রতিবাদ লিথুয়ানিয়ার
ইউক্রেনকে তহবিল দিতে ইইউ’র রাশিয়ার সম্পদ ব্যবহারের পদক্ষেপ ব্যর্থ
দিল্লিতে ২৯ অক্টোবর প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টিপাত হবে: মুখ্যমন্ত্রী
কিশোরগঞ্জে দরিদ্র পরিবারের মাঝে ২২টি টিউবওয়েল বিতরণ
কাল বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ করবে ইসলামী আন্দোলন
আইন উপদেষ্টার মন্তব্য দাবী করে ভুয়া ফটোকার্ড ছড়িয়ে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা : বাংলাফ্যাক্ট
খুলনার রূপসা, ভৈরব ও ময়ূর নদসহ ২২টি খালের দূষণ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি
তিস্তা মহাপরিকল্পনা দাবিতে এবার ৫ জেলায় পালিত হবে ‘স্তব্ধ রংপুর’
১০