জলবায়ু-উদ্বাস্তুদের জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির আহ্বান 

বাসস
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৩৪
খুলনায় সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় একীভূতকরণের ওপর গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত। ছবি: বাসস

খুলনা, ১০ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

আজ সোমবার খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসী ও অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তকরণ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এ আহ্বান জানানো হয়। কারিতাস খুলনা অঞ্চল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আলোচনায় নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সংস্থা এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৯, ২১, ২২ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশল ও বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে নীতিগত ও বাস্তবিক ব্যবধান দূর করা।

উদ্বোধনী বক্তব্যে কারিতাস খুলনা অঞ্চলের প্রোগ্রাম অফিসার ড. সুমন কুমার মালাকার গোলটেবিল আলোচনার উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।

স্বাগত বক্তব্যে কারিতাস খুলনা অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক আলবিনো নাথ দেশের দুর্যোগপ্রবণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস (ডিআরআর) এবং জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন (সিসিএ) উদ্যোগে সংস্থার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি ডিআরআর, সিসিএ এবং সামাজিক সুরক্ষা (এসপি)-এর সমন্বিত পদ্ধতি গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেন, যাতে সহনশীলতা নিশ্চিত হয় এবং কেউ পিছিয়ে না পড়ে।

খুলনা ও সাতক্ষীরা উপকূলীয় জেলা বারবার ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং লবণাক্ততার মতো দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে। এই দুর্যোগ হাজার হাজার মানুষকে শহরের বস্তিতে অভিবাসনে বাধ্য করে। সেখানে তারা নতুন সামাজিক-অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন এবং সঠিক কাগজপত্র ও নিরাপদ আবাসনের অভাবে প্রচলিত সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি থেকে বাদ পড়ে যান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খুলনার ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ শাহ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। এই জনগোষ্ঠীকে জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি। সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই সামাজিক সুরক্ষা কাঠামো গড়ে তুলতে পারি।

তিনি আরও বলেন, মাঠ পর্যায়ের সংস্থা, যেমন কারিতাসের এভিডেন্স ও সুপারিশ ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব শরীফ আসিফ রহমান বলেন, সিটি কর্পোরেশন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাস্তুচ্যুতির দুর্দশা গভীরভাবে উপলব্ধি করছে। আমরা এই ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে আমাদের নগর উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও সামাজিক কল্যাণ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করছি। কারিতাসের মতো সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব জোরদার করলে অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর সহনশীলতার উদ্যোগ ত্বরান্বিত হবে।

অনুষ্ঠানে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন তিনটি উপকূলীয় উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা উপস্থাপন করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
খুলনার চিংড়ি চাষীদের উন্নত গলদা চাষের কৌশল শিখতে ‘অভিজ্ঞতা বিনিময়’ সফর 
কারমাইকেল কলেজের ১০৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উৎসবের আমেজ
বিএমইউ এবং এনএসইউর মধ্যে এআই প্রযুক্তি সহায়তা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর 
সেবা প্রাপ্তি সহজ করতে ৭ দফা নির্দেশনা জারি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের
রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা প্রচারে উত্তরায় বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি
যারা হেরে যাওয়ার ভয় পাচ্ছেন, তারাই নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছেন : মির্জা ফখরুল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮তম টিএইচএম ডে ও ক্যারিয়ার ফেস্ট 
নাইজেরিয়ায় জিহাদিদের সংঘর্ষে নিহত প্রায় ২০০ 
বাংলা একাডেমিতে ‘সাহিত্যের রাজনীতি’ শীর্ষক সেমিনার মঙ্গলবার
টেস্ট ক্রিকেটে ২৫ বছর পূর্ণ করলো বাংলাদেশ
১০