
ঢাকা, ১১ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে প্রেরিত কর্মীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়, আত্মসাত ও অর্থপাচারের অভিযোগে চারটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
চারটি মামলায় মোট আসামি ৫ জন। তারা মালয়েশিয়ায় ১৮ হাজার ৫৬৩ জন কর্মী প্রেরণের মাধ্যমে কর্মীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছেন। যার মোট পরিমাণ ৩১০ কোটি ৯৩ লাখ টাকার বেশি।
আজ দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। কমিশনের সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম বাদী হয়ে ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এজাহার দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন— সেলিব্রিটি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফরিদা বানু, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল হাই (৭৫), অদিতী ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারী বিশ্বজিৎ সাহা (৫৫), রাব্বি ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ বশির (৬২) ও আর ভিং এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী হেফজুল বারী মোহাম্মদ লুৎফর রহমান (৬৪)।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিএমইটি ও বায়রার নিবন্ধন সংক্রান্ত শর্ত ভঙ্গ করেন। তারা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার বেশি অর্থ আদায় করে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে শ্রমিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করেন।
দুদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী— সেলিব্রিটি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফরিদা বানু ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হাই ৩ হাজার ৪৮৬ জন কর্মীর কাছ থেকে মোট ৫৮ কোটি ৩৯ লাখ ৫ হাজার টাকা, অদিতী ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারী বিশ্বজিৎ সাহা ৩ হাজার ৮৫২ জন কর্মীর কাছ থেকে ৬৪ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার টাকা, রাব্বি ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ বশির ৩ হাজার ১৪৮ জন কর্মীর কাছ থেকে ৫২ কোটি ৭২ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও আর ভিং এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী হেফজুল বারী মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ৮ হাজার ৭৭ জন কর্মীর কাছ থেকে ১৩৫ কোটি ২৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় পাঠানো প্রতিজন কর্মীর পাসপোর্ট ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ সরকার নির্ধারণ করলেও আসামিরা তা ফেরত না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন এবং অবৈধভাবে প্রাপ্ত অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ করেছেন।
তদন্তে মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় প্রতিবেদন, বিএমইটি ও সংশ্লিষ্ট সাক্ষীদের বক্তব্য পর্যালোচনায় এ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে দুদক জানিয়েছে।
এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০(বি)/১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪/১৬৫(ক)/৪২০/৪০৯/১০৯ ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা অনুযায়ী চারটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।