
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল খানের পিতা চৈতার পীর আলহাজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ খানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ডিএসইসি।
ডিএসইসির দপ্তর সম্পাদক জাফরুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, সংগঠনের সভাপতি মুক্তাদির অনিকসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মাওলানা নূর মোহাম্মদ খানের মৃত্যুতে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে গভীর শোক, দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
মাওলানা নূর মোহাম্মদ খান গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি দুই ছেলে, তিন মেয়ে, ১৪ নাতি-নাতনি এবং অসংখ্য ভক্তবৃন্দ রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। আজ রোববার সকাল ৭টায় কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার চৈতা নেছারিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা মাঠে আসর নামাজ বাদ দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
মরহুম আলহাজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ খান পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার চৈতা গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পরিবারের সন্তান। তার পিতা দক্ষিণবঙ্গের প্রখ্যাত সাধক ও পীরে কামেল আলহাজ মাওলানা ইউনুস (রহ.)। তিনি ছারছীনা দরবার শরীফের অন্যতম খলিফাও ছিলেন। পরিবারটির আদি পূর্বপুরুষ হেশামত উদ্দিন খান ইসলামের সেবায় ইরান থেকে এই অঞ্চলে আগমন করেছিলেন। ধর্মীয় ও সামাজিক অঙ্গনে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল।
তিনি নিজ বাড়িতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বহু আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন পাঠ্য রচনায়ও তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি ছিলেন একজন স্বনামধন্য আলেম, লেখক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের বোর্ড অফ গভর্নর, প্রধান পরীক্ষকসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। সাংগঠনিকভাবে বাংলাদেশ জমিয়তে হিজবুল্লাহর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেসিনের যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ কাজী অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এবং শিক্ষক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পদ ছিলেন।
অধ্যক্ষ হিসেবে অবসরের পর তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১ নং মাধবখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চৈতা নেছারিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মানব সেবাকে তিনি জীবনের মূল আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।