ঢাকা, ১৪ জুলাই ২০২৫ (বাসস) : কোল পালমারের জোড়া গোলে পিএসজিকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে চেলসি। তিনটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে। ম্যাচ শেষে বিজয়ী চেলসির খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মেটলাইফ স্টেডিয়ামে কাল ৮১ হাজার ১১৮ জন সমর্থকের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের উপস্থিতি বাড়তি আকর্ষন ছড়িয়েছে।
অথচ সুস্পষ্ট ফেবারিট হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্রে খেলতে এসেছিল ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। অনেকটাই দাপটের সাথে বড় দলগুলোকে বিদায় করে ফাইনালের টিকেটও পেয়েছিল। বিশেষ করে সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনাল ম্যাচের আগে পিএসজি ছিল দারুন উজ্জীবিত।
ফাইনালে চেলসি অবশ্য তাদেরকে একেবারে মাটিতে নামিয়ে আনে। প্রথমার্ধের মাঝামাঝিতে পালমার চেলসিকে এগিয়ে দেন। এরপর ৩০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন এই ইংলিশ তারকা। ৪৩ মিনিটে হুয়াও পেড্রো দলের হয়ে তৃতীয় গোল করলে চেলসির শিরোপা জয় সময়ের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়।
ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে মার্ক কুকুরেলাকে ধাক্কা দিয়ে লাল কার্ড দেখতে হয়েছে পিএসজির পর্তুগীজ মিডফিল্ডার হুয়াও নেভেসকে।
ম্যাচে জয়ের নায়ক পালমারের প্রশংসা করে চেলসি বস এনজো মারেসকা বলেছেন, ‘ক্লাব বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমাদের জন্য সত্যিই গর্বের। আমরা দারুন খুশী, বিশেষ করে পিএসজির মত বিশ্বসেরা একটি দলের বিপক্ষে এই জয়টা সত্যিই বিশেষ অর্জন। আমি মনে করি পিএসজির বস লুইস এনরিকে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচ। এই ধরনের ম্যাচে আমরা কোলের কাছ থেকে সবসময়ই কিছু প্রত্যাশা করি। কারন এটি একটি বড় ম্যাচ, বড় মুহূর্ত। এসব ম্যাচেই নিজেকে প্রমানের একটি সুযোগ আসে।’
এই ধরনের স্কোরলাইন ফাইনালে আগে খুব কম মানুষই প্রত্যাশা করেছিল। মৌসুমটা স্মরণীয় করে রাখতে এর থেকে বড় কিছু আর হতে পারেনা। উয়েফা কনফারেন্স লিগ জয়ের পর প্রথমবারের মত ৩২ দল নিয়ে আয়োজিত বর্ধিত কলেবরের ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপাও চেলসি জিতে নিল। টেবিলের চতুর্থ স্থানে থেকে প্রিমিয়ার লিগ শেষ করায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাও নিশ্চিত হয়েছে।
এছাড়া ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জেতায় প্রাইজ মানি হিসেবে ১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পকেটে পুরেছে চেলসি। এর অর্থ হচ্ছে আগামী মৌসুম শুরু আগে গ্রীষ্মকালীণ বিরতিটা দুর্দান্ত ভাবেই কাটবে ব্লুজদের।
পিএসজির দিক থেকে বলতে গেলে আর্থিকভাবে তারাও প্রায় সমানভাবেই লাভবান হয়েছে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ফরাসি লিগসহ কাপ ডাবল জয়ী শিরোপার সাথে মৌসুমের শেষ শিরোপাটা জিততে না পারার হতাশা তো থাকবেই।
লুইস এনরিকের দলের প্রতি মৌসুমেই ইউরোপীয়ান শিরোপার দিকেই চোখ থাকে। যা শেষ পর্যন্ত এবার সফলতার মুখ দেখেছে। টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে উয়েফা সুপার কাপ দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু করার আগে আপাতত প্রায় মাসখানেকের ছুটিটা উপভোগ করতে চায় এনরিকের শিষ্যরা।
ছয় সপ্তাহের মধ্যে এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মত বড় কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জণ করলো পিএসজি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে পরাজিত করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল পিএসজি। এবার সেই দলটি চেলসির সামনে দাঁড়াতেই পারলো না।
২২ মিনিটেমালো গুস্তোর কাছ থেকে নুনো মেনডেসের শট লুকাস বেরালডো ব্লক করলে বল আবারো গুস্তোর কাছে ফিরে আসে। তার পাস থেকে পালমারের কোনাকুনি শটে এগিয়ে যায় চেলসি। পিএসজির লেফট ব্যাক মেনডেসে তার পজিশন থেকে বাইরে চলে এলে পালমার বক্সের ভিতর সুবিধাজনক অবস্থান খুঁজে পায়। এই সুযোগে একই কর্ণার দিয়ে লো শটে তিনি ব্যবধান দ্বিগুন করেন। বিরতির দুই মিনিট আগে ব্রাজিলিয়ান পেড্রো ব্যবধান ৩-০’তে নিয়ে যান। ফ্লামিনেন্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালে জোড়া গোল করেছিলেন পেড্রো।
এর আগের আট ম্যাচে মাত্র এক গোল হজম করা পিএসজির খেলা দেখে মনে হয়েছে তারা ম্যাচে ফিরতে চাচ্ছেনা। প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে নেভেসের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝিতে বদলী খেলোয়াড় লিয়াম ডালেপ চেলসির হয়ে আরো এক গোল প্রায় করেই ফেলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সফল হতে পারেননি।