ঢাকা, ১৫ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : উত্তেজনাপূর্ণ লর্ডস টেস্টে ভারতকে ২২ রানে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। সিরিজের তৃতীয় টেস্টে রোমাঞ্চকর জয় মন ছুঁয়েছে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসকে।
ভারতকে ১৯৩ রানের টার্গেট দিয়ে টেস্টে শেষ সেশনে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড। টান-টান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ শেষে স্টোকস বলেন, ‘এমন একটা টেস্ট ম্যাচ জয় যদি কাউকে উত্তেজিত করতে না পারে, তা হলে আর কি উত্তেজিত করবে?’
টেস্টের চতুর্থ দিন ভারতকে জয়ের জন্য টার্গেট ছুঁড়ে দেয় ইংল্যান্ড। দিন শেষে ৫৮ রানের বিনিময়ে টিম ইন্ডিয়ার ৪ উইকেট তুলে নেয় ইংলিশ বোলাররা। পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনটাও দারুণ কেটেছে ইংল্যান্ডের।
৮২ রানে ইংল্যান্ডের সপ্তম উইকেটের পতন ঘটায় তারা। এতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে ইংলিশরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের জন্য বদ্ধপরিকর ছিলেন ভারতের রবীন্দ্র জাদেজা।
অষ্টম উইকেটে নিতিশ কুমার রেড্ডির সাথে ৯১ বলে ৩০, নবম উইকেটে জাসপ্রিত বুমরাহকে নিয়ে ১৩২ বলে ৩৫ রান যোগ করেন জাদেজা। তারপরও জয় থেকে অনেক দূরে ছিল ভারত। ১৪৭ রানে ভারতের নবম উইকেট পতনে ইংল্যান্ডের জয় ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু শেষ উইকেটে মোহাম্মদ সিরাজকে নিয়ে শেষবারের লড়াই শুরু করেন জাদেজা। তখন ৪৬ রান দরকার ভারতের।
চা-বিরতির আগে জয়ের ব্যবধানটা ৩০’এ নামিয়ে আনেন জাদেজা ও সিরাজ। তৃতীয় ও শেষ সেশনের পঞ্চম ওভারে সিরাজকে আউট করে ইংল্যান্ডকে জয় এনে দেন ইংল্যান্ড স্পিনার শোয়েব বশির।
স্টোকস বলেন, ‘শেষ উইকেটটা বশিরের ভাগ্যেই ছিল। সে দারুণ এক ক্রিকেটার। দলের জন্য সবসময়ই অবদান রাখতে চায় বশির।’
তিনি আরও বলেন, ‘ম্যাচে আমাদের ভাল সুযোগ ছিল। নিজেদের সেরাটা উজার করে দিতে চেয়েছিলাম।
হাল ছাড়তে চাইনি। শেষ পর্যন্ত জিততে পেরে ভাল লাগছে।’
লর্ডস টেস্টে বল হাতে ৫ উইকেট ও ব্যাট হাতে ৭৭ রান করে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন স্টোকস। নিজের পারফরমেন্স নিয়ে স্টোকস বলেন, ‘আমি অলরাউন্ডার। দলকে সাহায্য করার জন্য চারটি সুযোগ থাকে। দু’বার ব্যাট হাতে ও দু’বার বল হাতে। যতটা সম্ভব সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।’
প্রথম চারদিন ইংল্যান্ডের সাথে তাল মিলিয়ে লড়াই করার পর শেষ দিনে হার মানে ভারত। তবে ম্যাচ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক শুভমান গিল, ‘সকালেও ভেবেছিলাম ম্যাচটা জিতে যাব।
কারণ অনেকের ব্যাট করা বাকি ছিল। টপ অর্ডারে অন্তত দু’টো হাফ-সেঞ্চুরির জুটি হলেই ম্যাচ জিততে পারতাম আমরা। ইংল্যান্ড আমাদের চেয়ে ভাল খেলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চতুর্থ দিন শেষ এক ঘণ্টায় খুব খারাপ ব্যাট করেছি আমরা। বিশেষ করে শেষ দুই উইকেট হারানো উচিত হয়নি। পঞ্চম দিন সকালেও যদি একটা ৫০ রানের জুটি হত, তা হলে ভাল জায়গায় থাকতাম আমরা।’
সিরিজে পিছিয়ে পড়লেও দলের পারফরমেন্সে খুশি গিল, ‘কখনও-কখনও সিরিজের স্কোরকার্ড আসল চিত্রটা পরিষ্কার করে না। আমরা ভাল ক্রিকেট খেলেছি। এখন থেকে আরও ভাল খেলব বাকি সিরিজে।’
সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে আগামী ২৩ জুলাই ম্যানচেষ্টারে চতুর্থ টেস্টে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ভারত।