ঢাকা, ১৯ জুলাই ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) অংশ নিয়ে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট সর্ম্পকে পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা যে জ্ঞান অর্জন করেছেন তাতে উদ্বিগ্ন নন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক লিটন দাস। কারন পাকিস্তানের চেয়ে মিরপুরের ভেন্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের খেলার অভিজ্ঞতা বেশি।
এবারের বাংলাদেশ সফরে আসা পাকিস্তানের স্কোয়াডের ৯জন ক্রিকেটার গত বিপিএলে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে আবার অনেকে অতীতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও (ডিপিএল) খেলেছেন।
লিটন জানান, মিরপুরের কন্ডিশন সম্পর্কে পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের ভাল ধারণা আছে। কিন্তু বিপিএল এবং ডিপিএলের সময় খেলোয়াড়দের সাথে ড্রেসিং রুম ভাগাভাগি করার সুবাদে পাকিস্তানের দুর্বলতা এবং শক্তি সম্পর্কে ধারণা আছে বাংলাদেশেরও।
প্রথম টি-টোয়েন্টির আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে লিটন বলেন, ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের মজা হল, বিশ্বের সকল ক্রিকেটারের সাথে খেলার সুযোগ পাওয়া যায় ও বন্ধুত্বও করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি শুধুমাত্র জাতীয় দলের সাথে থাকা হয়, তাহলে বাইরের ক্রিকেটারদের সম্পর্কে জানা যাবে না। ড্রেসিংরুমও শেয়ার করা যাবে না।’
আগামীকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
লিটন বিশ্বাস করেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা দু’দলের জন্যই কাজে দেবে। তিনি বলেন, ‘দু’দলের জন্যই এটি কার্যকর হবে। তারা যেমন আমাদের শক্তি এবং দুর্বলতা জানে, আমরাও তাদের শক্তি এবং দুর্বলতা জানি। তাই আমার মনে হয় না খুব বেশি সমস্যা হবে।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজের সব ম্যাচ মিরপুরে খেলবে বাংলাদেশ। মিরপুরের উইকেট কেমন আচরণ করে, সেটি ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন বলেই এখানকার উইকেট নিয়ে আলোচনা বেশি হচ্ছে।
২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হওয়া সিরিজের উইকেট ব্যাটারদের জন্য মরণফাঁদ ছিল।
উইকেটের সুবিধা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে এবং নিউজিল্যান্ডকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু ঐ সিরিজের জয় বাংলাদেশের জন্য খুব বেশি গুরুত্ব বহন করেনি। কারণ বিশ্বের অন্য জায়গায় খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিল ব্যাটাররা।
তখন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার বলেছিলেন, মিরপুরের উইকেট ব্যাটারদের দক্ষতা নষ্ট করে দেয়।
ঐ দুই সিরিজ খেলার পর অনেক ব্যাটারের ক্যারিয়ার নিম্নমুখী হয়েছে। লিটন বলেন, ‘আমিও একমত। (২০২১ সালের নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ খেলার পর) অনেক ব্যাটারের ক্যারিয়ার নিম্নমুখি হয়েছে। আমি যদি বোলার হতাম, তাহলে ঐ উইকেটে খেললে হয়তো আমার ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ হত।’
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ব্যাটারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক লিটন। ১৮ ম্যাচে ১৩০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ৫১০ রান করেছেন তিনি।
লিটনের চেয়ে বেশি রান করেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান। মাহমুদুল্লাহ ৩৯ ম্যাচে ১১৯.১১ স্ট্রাইক রেটে ৮০৪ রান এবং সাকিব ৩৪ ম্যাচে ১০১ স্ট্রাইক রেটে ৫৪৭ রান করেছেন।
মিরপুরের উইকেটে ব্যাটারদের সমস্যা সবসময় হয় না বলে জানান লিটন। তার মতে, ‘ব্যাটারদের সবসময় সমস্যা হয় না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ঐ দু’টি সিরিজেই ব্যাটারদের সমস্যা হয়েছিল।’
মিরপুরের উইকেটের সাথে মানিয়ে নিতে অতিরিক্ত পরিকল্পনা করা হয় কিনা জানতে চাইলে লিটন বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরে এভাবেই খেলছি। আর কত নিজেকে সেট করব? আমি ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারি না, হ্যাঁ, এটা সমস্যা। আমি সবসময় ধারাবাহিকভাবে রান করার চেষ্টা করি। আমি সবসময় ধারাবাহিকভাবে অনুশীলন করার চেষ্টা করি এবং ভবিষ্যতেও তা করার চেষ্টা করব।’