ঢাকা, ১১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : আগামীকাল থেকে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ চক্র শুরু করতে যাচ্ছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান। এই চক্রে নিজেদের প্রথম টেস্ট সিরিজে দুই ম্যাচ খেলবে দু’দল। সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামছে তারা।
পাকিস্তানের লাহোরে বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রে চ্যাম্পিয়ন হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। গত জুনে লর্ডসে অনুষ্ঠিত ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মত আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতে প্রোটিয়ারা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে শিরোপা ধরে রাখার মিশন শুরু করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে প্রথম সিরিজেই নিয়মিত অধিনায়ক তেম্বা বাভুমাকে পাচ্ছে না প্রোটিয়ারা। গত সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড সফরে ওয়ানডে সিরিজ চলাকালীন পায়ের পেশির ইনজুরিতে পড়েন তিনি। বাভুমার নেতৃত্বে গত আসরে শিরোপা জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
বাভুমার অনুপস্থিতিতে পাকিস্তান সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দেবেন আইডেন মার্করাম। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লর্ডসের ফাইনালে ১৩৬ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেছিলেন এই ডান-হাতি ব্যাটার।
পাকিস্তান সিরিজ দিয়ে দুই বছর পর টেস্ট দলে ফিরেছেন অফ স্পিনার শিমরন হার্মার। কুঁচকির ইনজুরির কারণে সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলতে পারবেন না দলে সেরা স্পিনার কেশব মহারাজ।
শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিততে চান দক্ষিণ আফ্রিকার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মার্করাম। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন টেস্ট ফরম্যাটের বিশ্ব সেরা দল। এজন্য বিশ্ব সেরা দলের মতই আমাদের খেলতে হবে। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টই জয়ের জন্য আমরা মাঠে নামব। আমরা জানি, কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। নিজেদের মাঠে পাকিস্তান শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। তবে সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলে যেকোন প্রতিপক্ষকেই হারানো অসম্ভব কিছু না।’
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম তিন চক্রে আশানুরূপ পারফরমেন্স করতে পারেনি পাকিস্তান। তিন আসরে নয় দলের মধ্যে যথাক্রমে- ষষ্ঠ, সপ্তম ও নবম স্থানে ছিল তারা। এবার ফাইনালে উঠার লক্ষ্য নিয়ে নতুনভাবে টেস্টে পথচলা শুরু করতে যাচ্ছে পাকিস্তান।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের আগে পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ বলেন, ‘আমরা নতুনভাবে টেস্ট ফরম্যাটে যাত্রা করতে যাচ্ছি। আমাদের মূল লক্ষ্য এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা। এজন্য সিরিজের প্রথম থেকেই সেরা ক্রিকেট খেলতে চাই। আমরা ভাল ক্রিকেট খেলার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি, সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবে এবং দলের সাফল্যে অবদান রাখবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে পাকিস্তান দলে প্রথমবারের মত ডাক পেয়েছেন আসিফ আফ্রিদি, ফয়সাল আকরাম ও রোহাইল নাজির। এদের মধ্যে ৩৯ বছর বয়সী স্পিনার আসিফ আফ্রিদির দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা।
তবে আফ্রিদির পাশে দাঁড়িয়েছেন পাকিস্তান টেস্ট দলের প্রধান কোচ আজহার মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘ধারাবাহিক পারফরমেন্স বিবেচনায় দলে সুযোগ পেয়েছে আফ্রিদি। গত দুই মৌসুমে অসাধারণ পারফরমেন্স করেছে সে। গত বছর ৫৩ এবং এ বছর ২৭টি উইকেট শিকার করেছে আফ্রিদি। সর্বশেষ দুই বছর মিলিয়ে মোট ৮০ উইকেট পাওয়া বোলার অবশ্যই সুযোগ পাওয়ার যোগ্য। বয়স এখানে কোন বিষয় নয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে সে নিজেকে প্রমাণ করে দলে জায়গা করে নিয়েছে।’
এখন পর্যন্ত টেস্ট ফরম্যাটে ৩০ ম্যাচ খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান। এরমধ্যে পাকিস্তানের জয় ৬টিতে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ১৭ ম্যাচে। ৭ টেস্ট ড্র হয়।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল পাকিস্তান। এরপর টেস্টে সর্বশেষ ২০২৪ সালে দেখা হয় দু’দলের। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় পাকিস্তান।
পাকিস্তান দল : শান মাসুদ (অধিনায়ক), আমির জামাল, আব্দুল্লাহ শফিক, আবরার আহমেদ, আসিফ আফ্রিদি, বাবর আজম, ফয়সাল আকরাম, হাসান আলি, ইমাম-উল-হক, কামরান গুলাম, খুররম শাহজাদ, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), নোমান আলি, রোহাইল নাজির (উইকেটরক্ষক), সাজিদ খান, সালমান আলি আঘা, সৌদ শাকিল ও শাহিন শাহ আফ্রিদি।
ক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দল : আইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), ডেভিড বেডিংহ্যাম, কর্বিন বশ, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, টনি ডি জর্জি, জুবাইর হামজা, শিমরন হার্মার, মার্কো জানসেন, কেশব মহারাজ (দ্বিতীয় টেস্ট), উইয়ান মুল্ডার, সেনুরান মুথুসামি, প্রেনেলান সুব্রায়েন, কাগিসো রাবাদা, রায়ান রিকেলটন, ট্রিস্টান স্টাবস, কাইল ভেরেইনি।