কবি অতুল প্রসাদের পৈতৃক বাড়ি দখলের দাবি সত্য নয় : প্রেস উইং

বাসস
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১৭:৪৮ আপডেট: : ১৮ জুন ২০২৫, ১৮:৫৬

ঢাকা, ১৮ জুন, ২০২৫ (বাসস) : প্রখ্যাত বাঙালি কবি অতুল প্রসাদ সেনের পৈতৃক বাড়ি সম্পর্কে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো সত্য নয় বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

মঙ্গলবার রাতে প্রেস উইংয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ- সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস-এ পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি অনলাইনে একটি মিথ্যা দাবি প্রচারিত হয়েছে, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে যে অবহেলা এবং সরকারি তদারকির অভাবের কারণে প্রখ্যাত বাঙালি কবি অতুল প্রসাদ সেনের পৈতৃক বাড়িটি চরমপন্থীরা অবৈধভাবে দখল করেছে।’

এতে বলা হয়েছে, ‘এই মিথ্যা বর্ণনাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী এটিকে বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে হিন্দু, বাঙালি সংস্কৃতি এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর আক্রমণের বৃহত্তর দাবির সাথে যুক্ত করার চেষ্টা করেছেন।’

বাংলাদেশের দৈনিক কালেরকণ্ঠে একটি চাঞ্চল্যকর লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর গুজবটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে যেখানে দাবি করা হয় যে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় কবির পৈতৃক বাড়ি স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে দখল করেছেন।

‘অভিযোগের গুরুত্ব সত্ত্বেও প্রতিবেদনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য সূত্র বা প্রমাণের অভাব ছিল এবং এতে সাংবাদিকতার মৌলিক মানদণ্ড রক্ষিত হয়নি’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

পরবর্তীকালে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম অপইন্ডিয়া কালের কণ্ঠের দাবির প্রতিধ্বনি করে এবং আরও এক ধাপ এগিয়ে - ‘চরমপন্থীদের’ সম্পত্তি দখলের অভিযোগ আনে, যার ফলে মূল ভুল তথ্য আরও প্রশস্ত হয়। তবে ঐতিহাসিক রেকর্ড এবং স্থানীয় বিবরণ এই দাবিগুলিকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

অতুল প্রসাদ সেন ১৮৭১ সালে ঢাকায় তার মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পরে শিক্ষার জন্য কলকাতায় চলে আসেন এবং অবশেষে লখনৌতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি ১৯৩৪ সালে সেখানে মারা যান।

শরীয়তপুরের সম্পত্তিতে তিনি থাকতেন বলে জানা যায় না। দেশভাগের পর তার ছোট ভাই বসন্ত কুমার সেন এলাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে সমস্ত পারিবারিক সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। ১৯৬০ সাল থেকে আইনত লেনদেনের মাধ্যমে এই সম্পত্তিটি বিভিন্ন হাতে চলে যায়।

এটি এখন প্রয়াত আলী আজম মুন্সির পরিবারের মালিকানাধীন এবং তারা এতে বসবাস করেন। নথিভুক্ত বিক্রয় মূলে এ মালিকানা অবৈধ দখল নয়।

উল্লেখ্য, কোনো সরকারি বা প্রত্নতাত্ত্বিক কর্তৃপক্ষ কখনো এই সম্পত্তিকে ঐতিহ্য বা সংরক্ষিত জমি হিসাবে স্বীকৃতি দেয়নি। প্রচলিত আইন অনুসারে এটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। এটি সেই যুগের অন্যান্য হিন্দু মালিকানাধীন সম্পত্তির মতো পরিত্যক্ত হয়নি, বরং বিক্রি করা হয়েছিল।

সেন পরিবারের রেখে যাওয়া বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে মুন্সি পরিবার সংস্কার করেছে এবং কোনো রকম বিরোধ ছাড়াই সেখানে বসবাস করে আসছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সুতরাং, ‘অধিকার দখল’ বা ‘চরমপন্থী দখল’-এর যেকোনো দাবি বাস্তবতার আলোকে ভুল এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দেওয়ার জন্যই তৈরি বলে মনে হচ্ছে।’

প্রেস উইং জানিয়েছে, সম্প্রতি অপইন্ডিয়া এবং অন্যান্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারকে ধর্মীয় উগ্রবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে চিত্রিত করার লক্ষ্যে বেশ কিছু নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তবে, এই প্রতিবেদনগুলোতে সাংবাদিকতার সততার অভাব রয়েছে এবং এটি সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আলোচনার বিষয়গুলোর প্রতিধ্বনি হতে পারে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ঝিনাইদহে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ঢাকায় গ্রেফতার
খুলনায় যৌথবাহিনীর অভিযানে ৮ টন নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ
ব্যস্ত সড়ক এড়িয়ে বিকল্পস্থানে সভা-সমাবেশের অনুরোধ ডিএমপি কমিশনারের
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
‘জ্ঞান আর দক্ষতার মেলবন্ধনে যুবসমাজ কর্মঠ, সৃজনশীল, দায়িত্ববান মানুষে পরিণত হবে’
পাকিস্তানের উপপ্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে জামায়াত প্রতিনিধি দলের বৈঠক
সংসদ নির্বাচনের নিরাপত্তায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৬ লাখ সদস্য মোতায়েন হবে : সাজ্জাদ মাহমুদ
প্রবীণ সাংবাদিক ও বাসস পরিচালনা বোর্ডের সদস্য আলমগীর মহিউদ্দিনের দাফন সম্পন্ন
এখনই নির্বাচন হলে বিএনপি সর্বোচ্চ আসনে জিতবে : সাবেক এমপি হাবিব
খুলনায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটি গঠিত
১০