গাজা থেকে তিন জিম্মি ও ওফার কারাগার থেকে ফিলিস্তিনি বন্দীরা মুক্ত

বাসস
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৪৭

ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বাসস) : গাজায় হামাস সদস্যরা শনিবার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় প্রায় ১৬ মাস ধরে বন্দী থাকা ইসরাইলি জিম্মি ইয়ারডেন বিবাস, ওফের কালডেরন এবং কিথ সিগেলকে মুক্তি দিয়েছে।

এদিকে ইসরাইলের ওফার কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিদের বহনকারী একটি বাস পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়ায় পৌঁছেছে। এক এএফপি’র একজন সাংবাদিক এ তথ্য জানিয়েছেন।

দখলকৃত পশ্চিম তীরে অবস্থিত ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বন্দীরা রওনা দেন।

এএফপি’র এক সংবাদদাতা জানান, বাসটি রামাল্লার কাছে বেইতুনিয়ায় পৌঁছানোর পর বন্দীরা নেমে আসেন এবং তাদের স্বাগত জানাতে আত্মীয়স্বজনের উল্লাসধ্বনি শোনা যায়।

তারা ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি ইসলামি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি-বিনিময় চুক্তির আওতায় চতুর্থ দফায় এ জিম্মি ও কারাবন্দী মুক্তি দেওয়া হলো।

মুক্তি পাওয়া তিন ইসরাইলি নিয়ে জানা তথ্য নিম্নে দেওয়া হলো:

- ইয়ারডেন বিবাস, ৩৫ -

৩৫ বছর বয়সী বিবাসকে তার স্ত্রী শিরি এবং দুই সন্তান কফির ও আরিয়েল ছাড়া মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালে তাকে বন্দি করার সময় কফিরের বয়স ছিল আট মাস আর তার ভাই আরিয়েলের বয়স ছিল চার বছর।

হামাস দাবি করেছে, তাদের মা ও দুই সন্তান ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন, তবে ইসরাইল এ বিষয়ে নিশ্চিত করেনি।

যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বে কফির ও আরিয়েলের মুক্তির কথা থাকলেও ইসরাইল জানিয়েছে যে ৩৩ জন জিম্মির মধ্যে আটজন মারা গেছেন, তবে কারা মারা গেছেন তা নির্দিষ্ট করেনি।

হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার সময় বন্দুকধারীরা যখন বিবাসকে নীর ওজ কিবুতজ থেকে নিয়ে যায়, তখন তার মাথায় রক্তাক্ত আঘাতের চিহ্ন ছিল।

তার শ্বশুর-শাশুড়ি, ইয়োসি ও মার্গিট সিলবারম্যান, হামলায় নিহত হন যখন তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

হামলার আগেই বিবাস পরিবার গাজা থেকে ছোড়া রকেট হামলার কারণে নীর ওজ ছেড়ে গোলান মালভূমিতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল। ইসরাইল ১৯৬৭ সালে সিরিয়ার কাছ থেকে ওই এলাকা দখল করে ও পরে এটি সংযুক্ত করে।

পেশায় ওয়েল্ডার বিবাস ইতালিতে তার স্ত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং ভালো খাবারের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য পরিচিত ছিলেন বলে জানায় ইসরাইলি সংগঠন ‘দ্য হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম’।

- ওফের কালডেরন, ৫৪ -

ফরাসি-ইসরাইলি ওফের কালডেরন তার ছেলে এরেজ (১২) ও মেয়ে সাহার (১৬)-এর সঙ্গে নীর ওজ কিবুতজ থেকে অপহৃত হন। এ দুই সন্তানকে ২০২৩ সালের নভেম্বরের এক সপ্তাহব্যাপী গাজা যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি দেওয়া হয়।

তিনি একজন ছুতার এবং দক্ষ পর্বত বাইকার বলে জানিয়েছে ‘দ্য হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম’।

পর্তুগিজ গণমাধ্যমের মতে, তার মুক্তি সংক্রান্ত আলোচনাকে সহজতর করতে বন্দি হওয়ার পর ২০২৩ সালের অক্টোবরে তাকে পর্তুগালের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।

- কিথ সিগেল, ৬৫ -

আমেরিকান-ইসরাইলি কিথ সিগেল, যিনি পেশায় একজন কর্মসংস্থান থেরাপিস্ট, বন্দিদশায় ৬৫ বছর পূর্ণ করেন। হামাস তাকে কফার আজা কিবুতজের নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করেছিল, যেখানে তার স্ত্রী আভিভাকেও বন্দি করা হয়। আভিভাকে ২০২৩ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি দেওয়া হয়।

“ওরা দরজা খুলে ঢুকে পড়ে। আমরা তখন পায়জামা পরা অবস্থায় ছিলাম। তারপর খুব নির্মমভাবে আমাদের ধরে নিয়ে যায়ৃ ওরা কিথকে ধাক্কা দেয় এবং তার পাঁজর ভেঙে যায়,” আভিভা এএফপিকে বলেন।

এই দম্পতির চার সন্তান ও পাঁচ নাতি-নাতনি রয়েছে।

২০২৪ সালের ২৭ এপ্রিল হামাস একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে সিগেলকে কান্নায় ভেঙে পড়তে, মুখ লুকাতে এবং ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় কথা বলতে দেখা যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু 
দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঁদিয়ে প্রথমবারের মত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
আফগানিস্তানে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাত
নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের ওপর গণভোট চায় জামায়াত : ডা. তাহের
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে টাঙ্গাইলে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ
প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেয়ায় ইসিকে তারেক রহমানের ধন্যবাদ
বিনিয়োগ সহজীকরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে
গুপ্ত স্বৈরাচার ওত পেতে আছে, ঐক্যবদ্ধ হোন: তারেক রহমান
রাজধানীতে বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১৪
সরকার সকলক্ষেত্রে নারী উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে: গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের ডিজি
১০