শিরোনাম
ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বাসস): ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন সরকারের বৃহত্তম মানবিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডি’র কর্মীসংখ্যা দশ হাজার থেকে কমিয়ে তিনশ’রও কম করার পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমস।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংস্থায় টিকে থাকা কর্মীদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও মানবিক সহায়তা বিশেষজ্ঞরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। এই পরিকল্পনার বিষয়ে অবগত এমন তিনজন ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমটিকে এ তথ্য দিয়েছেন।
ছাঁটাই ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা
ইউএসএআইডি’র কর্মীদের প্রতিনিধিত্বকারী দুটি ইউনিয়ন বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তারা ছাঁটাই ও সংস্থাটির বিলুপ্তি ঠেকাতে একটি নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে। মামলায় যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে, সংস্থাটি কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া বন্ধ করা যাবে না।
এ বিষয়ে এএফপি’র পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলেও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে পরিচালিত প্রায় ৮০০টি অনুদান ও চুক্তি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টসহ আরও কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউএসএআইডি’র কর্মীসংখ্যা ব্যাপকভাবে কমানোর এই পরিকল্পনার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রশাসনিক ছুটির ঘোষণা ও ক্ষোভের বিস্তার
এই খবর আসার কয়েকদিন আগে, মঙ্গলবার, ইউএসএআইডি ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাপী তাদের কর্মীদের প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠাচ্ছে এবং বিদেশে কর্মরত কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে শুরু করেছে।
ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী, ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বে মার্কিন সরকারের আকার সংকুচিত করার এই পরিকল্পনা ওয়াশিংটনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার সংগঠন ও ডেমোক্র্যাটরা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ইউএসএআইডি বন্ধ হলে বৈশ্বিক মানবিক সংকট আরও বাড়বে।
ইউএসএআইডি বিশ্বের ১২০টি দেশের স্বাস্থ্য ও জরুরি সহায়তা কার্যক্রমে অর্থায়ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে এক ধরনের কৌশলগত ‘কোমল ক্ষমতা’ হিসেবে কাজ করে।
তবে, ইলন মাস্ক ইউএসএআইডি-কে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘এটি আমেরিকা বিরোধী উগ্র-বামপন্থী মার্ক্সবাদীদের একটি বিষাক্ত আস্তানা।’
ট্রাম্পও গত সপ্তাহে বলেছেন, সংস্থাটি ‘উন্মাদ বামপন্থীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।’
ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধের আশঙ্কা
ইউএসএআইডি’র ওপর এই আক্রমণের ফলে ইতোমধ্যেই বেশ কিছু সহায়তা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে, যার মধ্যে এইচআইভি প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রকল্পগুলোও রয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানবিক সংকট আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।