ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভকে (ফেড) নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘স্বাধীন’ বলে মন্তব্য করেছেন ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে একই সঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বকীয়তা ও মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর ক্রিস্টোফার ওয়ালার বৃহস্পতিবার ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আমাদের যা কিছু করি, তার সমালোচনা হতেই পারে—এটাই এই পদের দায়িত্বের অংশ। সমালোচনা সহ্য করতে না পারলে এই কাজের দায়িত্ব নেওয়া উচিত নয়।'
তিনি আরও বলেন, 'রাষ্ট্রপতি নীতিনির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে যেকোনো কিছু বলার অধিকার রাখেন, যেমন অন্য সবাই রাখে।' ওয়ালার নিজেই ট্রাম্পের মনোনয়নে ফেডের পরিচালনা পর্ষদে আসেন এবং ব্যাংকের সুদ নির্ধারণ কমিটিতে স্থায়ীভাবে ভোটাধিকারভুক্ত।
ওয়ালারের এই মন্তব্য ট্রাম্পের সাম্প্রতিক তীব্র সমালোচনার প্রেক্ষিতে এসেছে। ট্রাম্প সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, তিনি আবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও ফেড সুদ হার কমাচ্ছে না।
গত সপ্তাহে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ট্রাম্প ফের ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েলের কড়া সমালোচনা করেন। এতে ইউরোপ ও আমেরিকার সুদের হারে ব্যবধান বেড়ে গেছে। মার্কিন ফেড বেশ কয়েকবার সুদ হার অপরিবর্তিত রেখেছে মুদ্রাস্ফীতির চাপে।
ট্রাম্প প্রথমে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, পাওয়েলকে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বরখাস্ত করতে পারেন। যদিও পরে তিনি সেই মন্তব্য থেকে সরে আসেন, তবুও এই সম্ভাবনা অর্থবাজারে আতঙ্ক ছড়ায়। এতে অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেন, ফেডের স্বায়ত্তশাসন বিঘ্নিত হতে পারে।
ওয়ালার বলেন, ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি করলেও তার প্রভাব একবারই অনুভূত হবে—মূল্যবৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধির হ্রাসের মাধ্যমে।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, 'এই শুল্ক বৃদ্ধিজনিত মূল্যবৃদ্ধিকে সাময়িক ভেবে যেভাবে উপেক্ষা করতে হবে, তাতে যথেষ্ট সাহস দরকার।'
তার মতে, জুলাই মাসের আগে শুল্কের বড় কোনো প্রভাব মার্কিন অর্থনীতিতে পড়বে না। কারণ, তখনই ট্রাম্পের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হবে।
মার্কিন ফেডের লক্ষ্য হলো পূর্ণ কর্মসংস্থান ও মূল্য স্থিতি নিশ্চিত করা। এজন্য তারা সুদের হার বাড়ানো বা কমানোর মাধ্যমে অর্থনীতিতে গতি বা নিয়ন্ত্রণ আনে।
ওয়ালার বলেন, 'বড় আকারে শুল্ক ফিরে এলে ছাঁটাই বাড়তে পারে, বেকারত্বের হারও সামান্য বাড়তে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'যদি বেকারত্বে হঠাৎ করে উল্লেখযোগ্য গতি আসে, তাহলেই কেবল আমি সুদ কমানোর পক্ষে থাকব।:
সিএমই গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, আর্থিক বাজারে এখন ৯৫ শতাংশের বেশি সম্ভাবনা ধরা হচ্ছে যে ফেড আগামী বৈঠকেও সুদ হার অপরিবর্তিত রাখবে, যা বর্তমানে ৪.২৫ থেকে ৪.৫০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।