ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : ইতালির তেল ও গ্যাসের জায়ান্ট কোম্পানি ইএনআই জানিয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে তারা চলতি বছরে ২ বিলিয়ন ইউরোর ব্যয় হ্রাস করবে। তবে, শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ঘোষিত লভ্যাংশ পরিকল্পনায় কোম্পানিটি অটল থাকবে।
ইতালির মিলান থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ইএনআই’র চলতি ত্রৈমাসিকে মুনাফা ৩ শতাংশ কমে ১.১৭ বিলিয়ন ইউরো (১.৩৩ বিলিয়ন ডলার) হয়েছে, যা কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ক্লাওদিও ডেসকালজি ‘অনিশ্চিত বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট’ এবং অপরিশোধিত তেলের মূল্যে পতনের মধ্যেও ‘দৃঢ় ফলাফল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এক বিবৃতিতে ইএনআই জানিয়েছে, তারা ২০২৫ সালের মধ্যে ‘ম্যাক্রো অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং বাণিজ্য শুল্কের অনিশ্চয়তার’ প্রেক্ষিতে ২ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি মূল্যের ‘প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ’ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে । এই পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে মূলধনী ব্যয় হ্রাস, খরচে কাটছাঁট এবং অন্যান্য নগদ সংরক্ষণমূলক উদ্যোগ। যা সম্ভাব্য অনিশ্চয়তা মোকাবেলায় সহায়ক হবে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের নিট মূলধনী ব্যয় এখন ৬ বিলিয়ন ইউরোর নিচে সীমাবদ্ধ থাকবে, যা পূর্বে প্রাক্কলিত ছিল ৬.৫ থেকে ৭ বিলিয়ন ইউরোর মধ্যে।
ডেসকালজি বলেন, শেয়ার প্রতি ১.০৫ ইউরো হারে লভ্যাংশ প্রদানের পরিকল্পনায় তারা অটল রয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় পাঁচ শতাংশ বেশি। এছাড়া কোম্পানিটি ১.৫ বিলিয়ন ইউরোর শেয়ার বাইব্যাক কর্মসূচিও হাতে নিচ্ছে।
২০২৫ সালের জন্য ইএনআই এখন প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের মূল্য ৬৫ ডলার হিসেবে পূর্বাভাস দিচ্ছে, যেখানে আগের পূর্বাভাস ছিল ৭৫ ডলার। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও বাণিজ্য শুল্ক ঘিরে বাজারে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
ইএনআই জানায়, প্রথম প্রান্তিকে প্রতি ব্যারেলের ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে মানদণ্ডে ৯ শতাংশ কমে গড়ে ৭৫.৬৬ ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের রেফারেন্স মূল্য প্রতি মেগাওয়াট-ঘন্টা ৬৫ শতাংশ বেড়ে ৪৮ ইউরো হয়েছে বলে জানিয়েছে।
ইএনআই আরো জানায়, তারা চলতি বছরে প্রতিদিন গড়ে ১.৭ মিলিয়ন ব্যারেল হাইড্রোকার্বন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বজায় রাখবে। তেলের দামে পতনের কারণে কোম্পানিটির বিক্রয় আয় প্রথম প্রান্তিকে ২ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ২২.৫৬ বিলিয়ন ইউরোতে।
অ্যাডজাস্টেড নিট মুনাফা ১১ শতাংশ কমে ১.৪১ বিলিয়ন ইউরো হলেও, এটি বাজার বিশ্লেষক সংস্থা ফ্যাক্টসেটের পূর্বাভাস (১.২১ বিলিয়ন ইউরো) থেকে বেশি ছিল। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ইএনআই’র শেয়ারদর মিলান স্টক এক্সচেঞ্জে ২.৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে ১২.৭৬ ইউরোতে পৌঁছায়।