ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা বাশার আল-আসাদের শাসনামলে দেশটির স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। নতুন সিরীয় প্রশাসন এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল স্যাংকশনস ইমপ্লিমেন্টেশন অফিস (ওএফএসআই) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, 'নিম্নোক্ত সংস্থাগুলোকে কনসোলিডেটেড তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং এখন তারা সম্পদ জব্দের আওতায় নেই—স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।'
লন্ডন থেকে এএফপি জানায়, এছাড়াও, বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম ও গোয়েন্দা সংস্থার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। যদিও চলতি বছরের জানুয়ারিতেই আসাদ আমলের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ভেঙে দিয়েছে নতুন সিরীয় প্রশাসন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব ব্যক্তি ও সংস্থা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন, তারা 'সিরিয়ার বেসামরিক জনগণের ওপর দমন-পীড়নে জড়িত' 'অথবা 'সিরীয় শাসকগোষ্ঠীকে সমর্থন বা সুবিধা দেওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত' ছিলেন।
সরকার জানায়, আর্থিক খাত ও জ্বালানি উৎপাদনসহ অন্যান্য কয়েকটি খাতের ওপর থাকা বিধিনিষেধও তুলে নেওয়া হয়েছে।
সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্তকে 'আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে গঠনমূলক পদক্ষেপ এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত জনগণের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে সহায়ক' হিসেবে বর্ণনা করেছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'আর্থিক খাত ও জ্বালানি উৎপাদনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র ও গণমাধ্যম সংস্থাগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা' দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই উদ্যোগ জনসেবা ও নিরাপত্তা খাতে ‘জরুরি’ সংস্কার শুরু করতে সহায়ক হবে এবং অবকাঠামো ও জাতীয় অর্থনীতি পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবারও জানায়, সিরিয়া 'জাতীয় পুনর্গঠন, ন্যায়বিচার এবং সকল সিরিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে ভবিষ্যৎ নির্মাণে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ'।
আসাদকে ২৪ বছরের শাসন থেকে বিদায় দেওয়ার পর নতুন প্রশাসন পশ্চিমা দেশগুলোকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, বিদ্রোহীদের জিহাদি শিকড় অতীতের বিষয়, এবং আন্তর্জাতিকভাবে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া উচিত।
তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ জানিয়েছে, তারা দেখতে চায় নতুন প্রশাসন কীভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করে এবং মানবাধিকার নিশ্চিতে কী পদক্ষেপ নেয়, তার পরেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিবেচনা করবে। আপাতত তারা লক্ষ্যভিত্তিক ও সাময়িক ছাড়ের পথ নিচ্ছে।
শনিবার সিরিয়া সফররত জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা নতুন প্রশাসনকে বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অপেক্ষা না করে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।