ঢাকা, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলের লক্ষ্যে প্রচারণা চালানো তিনটি নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী গ্রুপ সোমবার যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে সাক্ষাৎ করে গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে একমত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, এটি গত বছর নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জাপানের পারমাণবিক বোমা সারভাইভারদের গ্রুপ নিহন হিডানকো, ২০১৭ সালের নোবেল বিজয়ী আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ প্রচারাভিযান (আইক্যান), এবং ১৯৮৫ সালের নোবেল বিজয়ী পারমাণবিক যুদ্ধ প্রতিরোধের জন্য আন্তর্জাতিক চিকিৎসক গ্রুপের একটি যৌথ আবেদন।
আইক্যান সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা দুই নেতার কাছে একটি যৌথ চিঠি পাঠিয়েছে।
চিঠিতে তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার রুaশ সমকক্ষ ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে লিখেছেন, 'এখন এক গভীর পারমাণবিক বিপদের মুহূর্তে আমরা আপনাদের কাছে উত্তেজনা প্রশমন এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য যথার্থ আলোচনা শুরু করতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।' এই দুই দেশ বিশ্বের ৯০ শতাংশ পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ করে।
গ্রুপগুলো বলেছে যে তারা জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফিরে এসে ট্রাম্পের একটি মন্তব্যের কারণে এই চিঠি লিখতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। ওই মন্তব্যে তিনি বলেছিলেন, তিনি চান বিশ্বের 'পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ' হোক, এবং ক্রেমলিনও এই ধারণার প্রতি খোলামেলা মনোভাব প্রকাশ করেছিল।
চিঠিতে তারা পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বর্তমান পরিবেশকে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে অস্থির উল্লেখ করে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এটি 'বিশ্বমানবতার জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি' বয়ে আনতে পারে।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা তাদের চিঠিতে দুই নেতাকে তাদের পূর্বসূরি রোনাল্ড রিগান ও মিখাইল গর্বাচেভের উদাহরণ অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তখনকার মার্কিন ও সোভিয়েত নেতা ১৯৮৬ সালে আইসল্যান্ডে শীতল যুদ্ধের সময় সাক্ষাৎ করে তাদের দেশের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের সর্ববৃহৎ হ্রাসের বিষয়ে একমত হয়েছিলেন।
গ্রুপগুলো 'পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা বৃদ্ধির পথে নিরাপত্তা নেই' যুক্তি দিয়ে বলেছে, 'এটি কেবলমাত্র এই অস্ত্রের দুর্ঘটনাজনিত বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়ায়।'
'একমাত্র টেকসই নিরাপত্তা কৌশল হলো এমন একটি কৌশল যা পৃথিবীকে পারমাণবিক বিপর্যয়ের কিনারা থেকে সরিয়ে আনে এবং নিরস্ত্রীকরণকে অগ্রাধিকার দেয়,' তারা যোগ করেন।
তারা বলেন, 'পারমাণবিক অস্ত্র প্রাকৃতিক কোনো অবধারিত শক্তি নয়, যা সহ্য করতে হবে।'
'এগুলো মানুষের হাতে তৈরি হয়েছে, এবং এগুলো মানুষের হাতে ধ্বংস করে ফেলা যেতে পারে। যা প্রয়োজন, তা হল রাজনৈতিক সদিচ্ছা।'